![]() হামলার আগে ইরানে গোপন অভিযান চালায় মোসাদ
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() গতকাল শুক্রবার সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এসব অভিযানের মধ্যে রয়েছে– ইরানের ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার কাছাকাছি খোলা জায়গায় নিখুঁত নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র মোতায়েন, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তি এবং তেহরানের কাছে একটি অ্যাটাক-ড্রোন ঘাঁটি স্থাপন। গতকাল স্থানীয় সময় সকালে ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বড় আকারে হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির দাবি, তেহরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য এই হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বেশ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের তথ্য দিয়েছেন, যার মধ্যে আছে তেহরানের মূল ইউরেনিয়াম পরিশোধন কেন্দ্র। তবে ইসরায়েলি হামলায় কী অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইসরায়েল এই সামরিক অভিযানের নাম দিয়েছে ‘রাইজিং লায়ন’ (উদীয়মান সিংহ)। মোসাদের গত ২০ বছরের হিসাব এটি। শুধু ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এই দুই বছরে চার ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে মোসাদ। এসব হত্যাকাণ্ডে যেসব অত্যাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছে মোসাদ, তা সত্যি চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো। আজকের ইরান-ইসরায়েলের মাঝে যে চরম বৈরী সম্পর্ক, অতীতে কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল না। ইসরায়েলের জন্মলগ্নে ইরান এবং ইহুদিবাদী এ দেশটি ছিল একে অপরের বন্ধু। এমনকি ১৯৪২ সালে যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়, তখন তুরস্কের পর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া দ্বিতীয় মুসলিম দেশটি ছিল ইরান। ১৯৫০ সালে ইসরায়েলকে এ স্বীকৃতি দেয় তেহরান। ক্রমে দুই দেশের মধ্যে গড়ে ওঠে অর্থনৈতিক এমনকি সামরিক সম্পর্কও। আরও অবাক করার মতো তথ্য হচ্ছে, মোসাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতাতেই ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা সাভাক। দুই দেশের গভীর এ সম্পর্ক ভেঙে পড়ে মূলত ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর। সেই সময় ক্ষমতায় আসা ইরানের বিপ্লবী সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। শিয়া সম্প্রদায়ের তৎকালীন আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি এবং তাঁর অনুসারীরা ছিলেন ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পুরোপুরি বিরুদ্ধে। ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশ্লেষকরা। প্রথমত, ইরানের দূরপাল্লার মিসাইল তৈরির চেষ্টা। দ্বিতীয়ত, পরমাণু প্রকল্প গ্রহণ। আসলে দ্বিতীয় কারণটিই যে ইসরায়েলের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইরানের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বিশেষত পরমাণু প্রকল্প ভেস্তে দিতে নানা অন্তর্ঘাতমূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে ইসরায়েল। প্রথম পদক্ষেপে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের টার্গেট করে মোসাদ। পরমাণু প্রকল্পের শীর্ষ বিজ্ঞানীরা গুপ্তহত্যার শিকার হতে থাকেন একের পর এক। এর পাশাপাশি তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির দিকেও নজর রাখতে শুরু করে তেল আবিব। |