![]() চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত, চালু হচ্ছে প্রথম রোবোটিক পুনর্বাসন কেন্দ্র
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা-পুনর্বাসন নিশ্চিতই অন্যতম লক্ষ্য হবে এই রোবোটিক রিহ্যাব সেন্টারের, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ জন রোগীকে উচ্চমানের পুনর্বাসন চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনই নয়, অন্যান্য সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে যাচ্ছে এই যুগান্তকারী উদ্যোগ। আগামীকাল বুধবার (২০ মে) সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের উদ্বোধন করবেন। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনসহ আরও অনেকেই উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশের প্রথম রোবোটিক রিহ্যাব সেন্টারটিতে থাকছে ৬২টি উন্নত রোবোটিক থেরাপি ইউনিট, যার মধ্যে ২২টি চালিত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা পরিচালিত এই ইউনিট প্রতিদিন প্রায় ৩০০ জন রোগীকে উচ্চমানের পুনর্বাসন চিকিৎসা দিতে পারবে। শুধু প্রযুক্তির প্রয়োগ নয়, এটি হবে একটি মূল্যবোধভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা, যেখানে প্রযুক্তি শ্রদ্ধা জানাবে সাহসী প্রাণদের আত্মত্যাগকে। উৎফুল্ল জুলাই যোদ্ধারা, নতুন করে হাঁটার স্বপ্ন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা তরুণদের একজন জরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ এই শিক্ষার্থী জানান, মিছিলের সামনের সারিতে থাকায় আন্দোলনের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এরপর কোমর থেকে নিচে অবশ হয়ে যায় শরীর। বিছানা আর হুইলচেয়ারের সঙ্গে শুরু হয় নতুন জীবন। কিন্তু এখন তার চোখেমুখে নতুন আশার আলো। কারণ, তাদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দেশের প্রথম রোবোটিক পুনর্বাসন সেন্টার চালু হওয়ার খবর ইতোমধ্যে জেনেছেন তিনি। খুশিতে উৎফুল্ল এই শিক্ষার্থী বলেন, একরকম ধরেই নিয়েছিলাম, আর কখনও হয়ত হাঁটতে পারব না। কপালের দুর্ভাগ্য বলেই মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু যখন শুনেছি দেশেই রোবোটিক থেরাপি সেন্টার চালু হচ্ছে, এমনকি এর মাধ্যমে আবারও হাঁটার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আমি শুনে খুবই অবাক এবং আনন্দিত হয়েছি। আমিসহ সব জুলাই আহতরাই চীন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। জরিফুল বলেন, আমি জানি বিষয়টা হয়ত এতো সহজ হবে না। কিন্তু এখনো আশা আছে আবার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর, মাটির ওপর নিজের পায়ে হাঁটার। আহত আরেক তরুণ সাদিকুর রহমান, যিনি বুকে রবার বুলেটের আঘাতে মেরুদণ্ডে মারাত্মক জখম পেয়ে আহত হন। তিনি জানান, দুই মাস আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। শরীর নড়ছিল না। ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ছিলাম। কিন্তু এখন যদি এই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কিছুটা সুস্থ হয়ে আবার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি, তাহলে বুঝব, সেই দিনের লড়াই সার্থক হয়েছে। সাদিক জানান, দেশে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালু হচ্ছে শোনার পর থেকে ভিডিওতে ইউরোপ-চীন-জাপানে রোবোটিক রিহ্যাবের ভিডিও দেখে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন। তিনি বলেন, আহতদের অনেকেই যখন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে, তখন মনে মনে ভাবতাম বিদেশ তো আর যাওয়া হবে না, দেশেও আর উন্নত চিকিৎসা সম্ভব না। এভাবেই বাকিটা সময় পার করতে হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, জীবন নতুন করে শুরু হতে পারে। এই জরিফুল-সাদিকদের মতো জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত আরও অনেকেই রোবোটিক রিহ্যাব সেন্টারের খবরে আশায় বুক বাঁধছেন। যন্ত্রনির্ভর এই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি তাদের শুধু শরীর নয়, মনকেও নতুন করে বাঁচার সুযোগ দিচ্ছে। সুস্থতা এখন আর শুধু ওষুধ কিংবা হুইলচেয়ারে সীমাবদ্ধ নয়— এটা হয়ে উঠছে প্রযুক্তিনির্ভর প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি। আধুনিক প্রযুক্তির সম্মিলন : কী থাকছে এই সেন্টারে? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারটি মোট ৬২টি রোবোটিক ইউনিট দ্বারা সজ্জিত, যার মধ্যে ২২টি সরাসরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত। প্রতিটি যন্ত্র নির্দিষ্ট শারীরিক পুনর্বাসন চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ডিজাইন করা হয়েছে। এর আওতায় থাকবে রোবোটিক গেইট ট্রেইনিং সিস্টেম, এক্সোস্কেলিটন থেরাপি, রোবোটিক আর্ম রিহ্যাবিলিটেশন ডিভাইস, এআই-বেইজড নিউরোফিডব্যাক সিস্টেম এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) থেরাপি সিস্টেমসহ আরও অসংখ্য রোবোটিক যন্ত্রপাতি। রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে দায়িত্ব পাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, এই রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে রোবোটিক আর্ম এক্সোস্কেলেটন, যা ব্যবহৃত হবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের হাঁটার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে। রোগীর শরীরের বাইরের অংশে লাগানো হয় এই যন্ত্রটি, যা পায়ের চলাচলকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। এছাড়াও আহতদের চিকিৎসায় মাল্টি-অ্যাংগেল মুভমেন্ট ট্রেইনার ব্যবহার করা হবে স্ট্রোক বা নার্ভ ইনজুরিতে আক্রান্তদের জন্য। এটি রোগীর হাত বা পা নড়াচড়ায় সহায়তা করে এবং থেরাপির মাধ্যমে নার্ভ সিস্টেমের পুনরুজ্জীবন ঘটায়। তিনি বলেন, সেন্টারটিতে থাকছে ইন্টেলিজেন্ট ব্যালান্স সিমুলেটর নামের একটি যন্ত্র, যাদের মেরুদণ্ড বা ব্রেইন ইনজুরির ফলে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যা হয়, এটি তাদের সাহায্য করবে। এই যন্ত্রটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ভিত্তিক, যেখানে রোগীরা ভার্চুয়াল ট্র্যাক অনুসরণ করে চলাফেরা শিখতে পারেন। এ ছাড়া, ফিঙ্গার মোবিলাইজার ও পাম-গ্লাভ থেরাপি ইউনিট ব্যবহার করে হাতের প্যারালাইসিস বা গিলিয়েন-ব্যারে সিনড্রোমে আক্রান্তদের হাতের শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করা হয়। কী ধরনের চিকিৎসাসেবা মিলবে? বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম বলেন, রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারটি বিশেষভাবে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় আহত সাহসী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য করা হয়েছে। এছাড়াও এই সেন্টারটি নানা ধরনের জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে যেসব রোগীর ফিজিক্যাল বা নিউরোলজিক্যাল ক্ষতি হয়েছে, তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া হবে অনেক গতিশীল ও কার্যকর। তিনি বলেন, এই সেন্টারে স্ট্রোকের কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের জন্য থাকবে পূর্ণাঙ্গ রোবোটিক থেরাপি প্রোগ্রাম, যার মধ্যে রয়েছে মোটর স্কিল উন্নয়ন, ভারসাম্য বজায় রাখা এবং হাঁটা শেখানো। মেরুদণ্ডের ইনজুরির ফলে যারা প্যারালাইসিসের শিকার হয়েছেন, তারা পাবেন বিশেষভাবে কাস্টমাইজড রোবোটিক সাপোর্ট। দুর্ঘটনায় আহত পঙ্গু ব্যক্তি বা নার্ভ ইনজুরিতে যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না, তাদের জন্য থাকবে দীর্ঘমেয়াদি ফিজিক্যাল থেরাপির আয়োজন। ডা. শাহিনুল আলম বলেন, সেরিব্রাল পালসি, গিলিয়েন-ব্যারে সিনড্রোম, ফ্রোজেন শোল্ডার, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, অথবা শরীরের অস্বাভাবিক শক্ত হয়ে যাওয়া সমস্যার জন্য এই সেন্টারে থাকবে আলাদা সেশন এবং নিরীক্ষিত থেরাপি সিস্টেম। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই সেন্টার প্রতিদিন গড়ে ৩০০ জন রোগীকে সেবা দিতে পারবে। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল থাকায় এটি দেশের বৃহৎ ফিজিওথেরাপি এবং পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হবে। চীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রস্তুত চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্ট ও নার্সরা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোবোটিক থেরাপি কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে চীনে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ১৫ জন চিকিৎসক, ১০ জন ফিজিওথেরাপিস্ট এবং ১০ জন নার্স। তাদের তত্ত্বাবধানেই এই থেরাপি সেবা প্রাথমিক পর্যায়ে চালু হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন দুজন চীনা রোবোটিক বিশেষজ্ঞ, যারা স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীদের আরও অন্তত ১০ দিন প্রশিক্ষণ দেবেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এতে শুধু রোবোটিক থেরাপির সেবার মানই উন্নত হবে না, বরং দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় টেকনিক্যাল দক্ষতা ও আত্মনির্ভরতা বাড়বে। চীনের সরকার এ প্রকল্পে কেবল উন্নত যন্ত্রপাতি সরবরাহই করেনি, বরং দক্ষ জনবল গঠনে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে এই উদ্যোগকে টেকসই ও কার্যকর করে তুলেছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, চীনের সরকার কেবল উন্নত যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেই থেমে থাকেনি, বরং আমাদের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এর ফলে সেবার মান যেমন বেড়েছে, তেমনি আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় টেকনিক্যাল সক্ষমতাও দীর্ঘমেয়াদে বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতে, এই সমন্বিত সহযোগিতা প্রকল্পটিকে টেকসই, কার্যকর এবং ভবিষ্যত-নির্ভর এক নতুন চিকিৎসা ধারায় পরিণত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার কেবল একটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রই নয়, বরং চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তির এক যুগান্তকারী উদাহরণ। এখনো যেখানে দেশে ফিজিওথেরাপি ও নিউরো-রিহ্যাবিলিটেশন খাত তুলনামূলকভাবে অনুন্নত, সেখানে এই অত্যাধুনিক কেন্দ্র পুরো চিকিৎসা কাঠামোতে গতি আনবে এবং নতুন পথ দেখাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সেন্টারকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে দেশেই নিউরো-রিহ্যাবিলিটেশন প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও বিশেষায়িত চিকিৎসা কার্যক্রম গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এতে করে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য প্রযুক্তির দিক থেকে একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে, যা দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ টিমের সদস্য, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির হিমু বলেন, এই রোবোটিক থেরাপি প্রযুক্তি দেশে রোগ নির্ণয় ও পুনর্বাসন চিকিৎসাকে আরও নির্ভরযোগ্য, আধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে। বিশেষ করে যারা দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যান কিংবা স্ট্রোকের পর চলাফেরার সক্ষমতা হারান, তাদের দ্রুত সুস্থ হয়ে কর্মজীবনে ফিরে আসার পথ তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু শারীরিক নয়, মানসিক পুনর্বাসনও দ্রুততর হবে। পাশাপাশি যেসব রোগীকে এতদিন উন্নত থেরাপির জন্য বিদেশে পাঠাতে হতো, সেই চাপ কমবে। এতে দেশের অর্থনৈতিক সাশ্রয় যেমন হবে, তেমনি সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগও বাড়বে। পুরোদমে ‘সুপার হাসপাতাল’ চালু করতে সরকারের সহযোগিতা কামনা বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল বর্তমানে আংশিকভাবে চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম জানিয়েছেন, হাসপাতালটিকে পুরোপুরি কার্যকর করতে সরকারের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, আমরা এই হাসপাতালটিকে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সুপার স্পেশালাইজড চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু এর পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগাতে অর্থায়ন ও জনবল নিয়োগে সরকারের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার শুধু চিকিৎসা নয়, বরং এভিডেন্স বেইজড মেডিসিন এবং গুড মেডিকেল প্র্যাক্টিসের এক কার্যকর উদাহরণ। এখানে আমরা সেবার পাশাপাশি চিকিৎসা গবেষণার জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্মও গড়ে তুলছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতে, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি সম্পূর্ণরূপে চালু হলে তা শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও চিকিৎসা, গবেষণা ও স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে একটি রোল মডেল হয়ে উঠতে পারে। উপাচার্য আরও জানান, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম বেতার ভবনে সীমিত পরিসরে চালু রয়েছে। তবে একটি আন্তর্জাতিক মানের ডায়াগনস্টিক ল্যাব এবং রিসার্চ সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে পূর্বাচলে ২০০ বিঘা জমির জন্য আবেদন প্রক্রিয়াধীন আছে। এটি অনুমোদন পেলে দেশের স্বাস্থ্যখাতে একটি স্থায়ী ও আধুনিক গবেষণাভিত্তিক অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হবে। |