আজ শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৯ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
 / মতামত / নবাব স্যার সলিমুল্লাহ : একটি জীবন-একটি ইতিহাস
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ : একটি জীবন-একটি ইতিহাস
এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া:
Published : Friday, 15 January, 2021 at 12:50 AM
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ : একটি জীবন-একটি ইতিহাসনবাব স্যার সলিমুল্লাহ, আমাদের ইতিহাসের দ্যুতিময় ব্যক্তিত্ব, উপমহাদেশের আজাদী ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের এক অগ্রনায়ক ও উজ্জল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক। যদিও আজকাল আমরা আর তার নামটি স্মরণ করতে চাই না। কেন যেন আজকাল আমরা অনেকের কৃতিত্বই ভুলে যেতে চাইছি অথবা মুছে ফেলতে চাচ্ছি। ফলে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ অনেকটা আড়ালেই যেন চলে যাচ্ছেন।

এই অঞ্চলে শিক্ষা, সমাজ, জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক চিন্তা ও কর্ম ছিল নবাব স্যার সলিমুল্লাহর জীবনের অপরিহার্য অংশ। তার পৃষ্ঠপোষকতার ফলে উনিশ শতকের শেষ ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রায় দেড় দশক পর্যন্ত শাহবাগের নওয়াব বাড়ি শুধু রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মস্থলই নয়, নাটক, সঙ্গীত, চিত্রকলা, ক্রীড়া তথা দেশের প্রধান সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।

পূর্ববাংলার মানুষের অধিকার ও স্বার্থ আদায়ে বিশ শতকের গোড়ার দিকে যিনি নেতৃত্বের হাল ধরেন, তিনিই হলেন নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ। যার জন্ম ৭ জুন ১৮৭১। তাঁর বাবা ছিলেন নওয়াব স্যার আহসানুল্লাহ (১৮৪৬-১৯০১) এবং দাদা ছিলেন নওয়াব স্যার আবদুল গনী (১৮১৩-১৮৯৬)। জমিদার পরিবার হিসেবে পূর্ববাংলার  এই পরিবারের নাম ছিল অগ্রগণ্য।

ঢাকার নবাব আব্দুল গণির পুত্র নবাব আহসানউল্লাহ'র মৃত্যুর পর তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ৩০ বছর বয়সী খাজা সলিমুল্লাহ নবাব পদে অধিষ্ঠিত হন। বাস্তববাদী এই তরুণ নবাব যথার্থ ভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, পূর্ব বাংলার পশ্চাৎপদ ও দরিদ্র মুসলমানদের শিক্ষা দীক্ষায় উন্নত করতে না পারলে তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি আসবে না। ঢাকার নবাব হিসাবে তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল মহল্লায় মহল্লায় নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন। এ থেকেই বোঝা যায় যে তিনি শিক্ষা বিস্তারে কতোটা মনোযোগী ছিলেন।

১৯০৩-০৪ সালে ইংরেজ সরকারের বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনার ওপর মতামত দিতে গিয়ে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯০৪ সালের ১১ জানুয়ারি পূর্ববঙ্গের হিন্দু-মুসলিম নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আহসান মঞ্জিলে এক সভা করে সরকারের বঙ্গবিভাগ পরিকল্পনার কিছু বিষয় বিরোধিতা করেন। তিনি পূর্ববঙ্গের অধিবাসীদের সুবিধার্থে ঢাকায় রাজধানী করে বৃহত্তর প্রদেশ গঠনের এক বিকল্প প্রস্তাবও দেন। ভাইসরয় লর্ড কার্জন পূর্ববঙ্গ সফরে এসে ১৯০৪ সালের ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নবাব সলিমুল্লাহর আতিথ্য গ্রহণ করেন। ওই সময় তাঁদের মধ্যে আলোচনার ফলে বঙ্গ বিভাগ পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আসে। এরপর ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর বঙ্গবিভাগ কার্যকর হলে ঢাকা নতুন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখে বঙ্গবিভাগ টিকিয়ে রাখার পক্ষে জনমত সংগঠিত করার ব্যাপারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নতুন প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দিনেই তাঁর সভাপতিত্বে ঢাকার নর্থব্রুক হলে পূর্ববঙ্গের নেতৃস্থানীয় মুসলিমদের সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভা থেকে গঠিত হয় ‘Mohammedan Provincial Union’ নামে একটি রাজনৈতিক সমিতি। সে সময়ে এ সমিতি বাঙালি মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্লাটফরম হিসেবে কাজ করে। স্যার সলিমুল্লাহ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন মফস্বল শহরে সভা করে নতুন প্রদেশের অনুকূলে জনমত সৃষ্টি করেন। অন্যদিকে কংগ্রেস এর বিরোধিতায় আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯০৬ সালে স্যার সলিমুল্লাহ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতি’ গঠন করেন। ওই বছরেই ১৪ ও ১৫ এপ্রিল ঢাকার শাহবাগে অনুষ্ঠিত সমিতির প্রথম অধিবেশনে তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯০৬ সালে স্যার সলিমুল্লাহ ‘Muslim All India Confederacy’ নামে একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁর পরিকল্পনাটি বিবেচনার জন্য উপমহাদেশের বিভিন্ন নেতা ও সমিতির নিকট প্রেরণ এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে আলীগড় আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট নেতাদের অনুরোধ করে ‘নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সমিতি’ (All India Mohammedan Educational Conference)-এর ২০তম অধিবেশন তিনি সম্পূর্ণ নিজ ব্যয়ে ঢাকায় আয়োজনের ব্যবস্থা করেন। ১৯০৬ সালের ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর নবাবের শাহবাগস্থ পারিবারিক বাগান-বাড়িতে সর্বভারতীয় মুসলিম নেতৃবৃন্দসহ প্রায় দুই হাজারের বেশি সুধী যোগ দেন। উক্ত অধিবেশনের শেষ দিন ৩০ ডিসেম্বর নওয়াব সলিমুল্লাহর প্রস্তাবনায় ‘All India Muslim League’ গঠিত হয়। তিনি এর সহ-সভাপতি এবং গঠনতন্ত্র তৈরি কমিটির সদস্য মনোনীত হন। ১৯০৭ সালে নওয়াব সলিমুল্লাহ সংগঠনের শাখা স্থাপনের উদ্দেশ্যে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, পাবনা, কুমিল্লা প্রভৃতি স্থানে জনসভা করেন। ১৯০৭ সালের ৪ মার্চ কুমিল্লায় এ ধরনের একটি সভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধীরা বাধা দেয়, তা সত্বেও নওয়াব সলিমুল্লাহ তাঁর কর্ম-তৎপরতা অব্যাহত রাখেন। একই বছর কলকাতায় উভয় বঙ্গের মুসলিম নেতৃবৃন্দের এক সভায় ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগ’ (All Bengal Muslim League) গঠিত হয় এবং তিনি এর সভাপতি মনোনীত হন। ১৯০৮ সালের জুন মাসে তিনি ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগ’ গঠন করে এর সেক্রেটারি হন। একই বছর ২৭ ডিসেম্বর অমৃতসরে নওয়াব সলিমুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ‘নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সমিতি’র ২২তম সভা হয়। সেখানে ৩০-৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের সভায় তিনি মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচন দাবি করেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে রাজনৈতিক আলোচনার সুযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। নতুন প্রদেশে হিন্দু মুসলিমদের সুসম্পর্ক রক্ষার জন্য তিনি উভয় সম্প্রদায়ের সম্পদশালী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ১৯০৯ সালের ২১ মার্চ 'Imperial League of Eastern Bengal and Assam’ গঠন করেন। এ বছরেই তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগ পুনর্গঠন এবং এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯১২ সালের ২ মার্চ নওয়াব সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে কলকাতায় ডালহৌসী ইনস্টিটিউটে যুক্তবঙ্গের মুসলিম নেতৃবৃন্দের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় তাঁর প্রস্তাবের ভিত্তিতে উভয় বাংলার স্বতন্ত্র দুটি লীগকে একত্র করে ‘প্রেসিডেন্সি মুসলিম লীগ’ গঠিত হয় এবং তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই সভায় অনুরূপভাবে উভয়বঙ্গের মুসলিম সমিতি দুটিকে একত্র করে গঠিত হয় ‘বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন’। তিনি এ সংগঠনেরও সভাপতি হন। ১৯১২ সালের ৩-৪ মার্চ কলকাতায় অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের সভায় সভাপতির ভাষণে তিনি পূর্ববঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতাকারীদের যুক্তি খন্ডন করেন। তিনি মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন এবং সরকারি চাকরিতে তাঁদের সংখ্যানুপাতে কোটা ধার্যের দাবি জানান। ১৯১৪ সালের ১১-১২ এপ্রিল তিনি ঢাকায় যুক্তবঙ্গের মুসলিম শিক্ষা সমিতির অধিবেশন এবং ১৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্সি মুসলিম লীগের অধিবেশন আহবান করেন। এরপরই তিনি কার্যত কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নেন।

মুসলিম শিক্ষার প্রতি স্যার সলিমুল্লাহর বিশেষ আগ্রহ ছিল। স্বল্পকালের মধ্যেই তার উৎসাহে ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী ইত্যাদি শহরে মুসলিম ছাত্রদের জন্য ‘ফুলার হোস্টেল’ স্থাপিত হয়। আলীগড় কলেজ-বোর্ডিং হাউসের নমুনায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজের পাশে একটি ‘মোহামেডান হল’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত ছিল অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গ রদ এবং নবগঠিত পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ফলে এ অঞ্চলের মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে যে হতাশা নেমে আসে, তাতে প্রলেপদানের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বলা চলে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে যেমন পরিণতিতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অপরিহার্য ছিল, তেমনি আবার বঙ্গভঙ্গ রদের পরেও সে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অনিবার্য হয়ে পড়ে। সুতরাং বলা যায়, প্রথমত বঙ্গভঙ্গ এবং তা রদের ফলেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এ কথাও বলা যায়, বঙ্গভঙ্গ না হলে হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতো না। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমান ঘনবসতিপূর্ণ পূর্ববঙ্গের মানুষের মধ্যে যে কয়েকটি দাবি জনপ্রিয়তা পায়, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতির’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সম্মেলন সাড়া জাগায়। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আওয়াজ তোলেন সর্বপ্রথম ‘মোহামেডান এডুকেশন্যাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমদ খাঁ। ১৯০৬ সালে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান পূর্ব বাংলার উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম প্রস্তাব হল- এ প্রদেশে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

বঙ্গভঙ্গ রদ এবং নবগঠিত পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ফলে এ অঞ্চলের মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে যে হতাশা নেমে আসে, তাতে প্রলেপদানের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বলা চলে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে যেমন পরিণতিতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অপরিহার্য ছিল, তেমনি আবার বঙ্গভঙ্গ রদের পরেও সে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অনিবার্য হয়ে পড়ে।

সুতরাং বলা যায়, প্রথমত বঙ্গভঙ্গ এবং তা রদের ফলেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এ কথাও বলা যায়, বঙ্গভঙ্গ না হলে হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতো না। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমান ঘনবসতিপূর্ণ পূর্ববঙ্গের মানুষের মধ্যে যে কয়েকটি দাবি জনপ্রিয়তা পায়, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতির’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সম্মেলন সাড়া জাগায়। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আওয়াজ তোলেন সর্বপ্রথম ‘মোহামেডান এডুকেশন্যাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমদ খাঁ। ১৯০৬ সালে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান পূর্ব বাংলার উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম প্রস্তাব হল- এ প্রদেশে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

বঙ্গভঙ্গ রদ এবং নবগঠিত পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ফলে এ অঞ্চলের মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে যে হতাশা নেমে আসে, তাতে প্রলেপদানের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বলা চলে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে যেমন পরিণতিতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অপরিহার্য ছিল, তেমনি আবার বঙ্গভঙ্গ রদের পরেও সে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অনিবার্য হয়ে পড়ে।

সুতরাং বলা যায়, প্রথমত বঙ্গভঙ্গ এবং তা রদের ফলেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এ কথাও বলা যায়, বঙ্গভঙ্গ না হলে হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতো না। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমান ঘনবসতিপূর্ণ পূর্ববঙ্গের মানুষের মধ্যে যে কয়েকটি দাবি জনপ্রিয়তা পায়, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতির’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সম্মেলন সাড়া জাগায়। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আওয়াজ তোলেন সর্বপ্রথম ‘মোহামেডান এডুকেশন্যাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমদ খাঁ। ১৯০৬ সালে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান পূর্ব বাংলার উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম প্রস্তাব হল- এ প্রদেশে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

শিক্ষাই মুসলমানদের মুক্তির একমাত্র পথ- এ বিবেচনায় গভর্নমেন্ট সর্বান্তকরণে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নবাব সলিমুল্লাহ ভারত সচিবের কাছে সুপারিশ করেন। তদনুসারে ১৯১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এক ইশতেহারে ভারত সরকার কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ ঘোষণা করা হয়। ঢাকা ইউনিভার্সিটি কমিটির অধীনে ইউনিভার্সিটির পাঠ্যসূচি রচনার উদ্দেশ্যে ২৫টি সাব-কমিটি গঠিত হয়। ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ বিষয়ের সাব-কমিটির সঙ্গে নবাব সলিমুল্লাহ ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।

নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে বঙ্গভঙ্গকে অটুট রাখার যে আন্দোলন হয়েছিল তার প্রভাব সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী হয়েছিল।  ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গ রহিতকরণের ঘটনায় সলিমুল্লাহ খুবই দুঃখ পেয়েছিলেন। কিন্তু শাসকদের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে আবেদন-অনুরোধের পথেই থাকেন তিনি। তিনি অবিভক্ত বাংলার ব্যবস্থাপক পরিষদের সদস্য, ইম্পেরিয়াল কাউন্সিলের সদস্য এবং পূর্ববঙ্গ ও আসামের ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ছিলেন। বঙ্গভঙ্গের পর ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ বরাবর পূর্ববঙ্গ ও ঢাকার অমর্যাদার কথা তুলে ধরে হতাশা ব্যক্ত করেন। নওয়াব আলী চৌধুরী, এ কে ফজলুল হকসহ পূর্ববঙ্গের মুসলিম নেতাদের নিয়ে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি তোলেন তিনি। সরকার এই দাবি ১৯১২ সালে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে এর বিরুদ্ধেও যে প্রবল আন্দোলন হয়েছিল, সে কথা সুবিদিত। তবে শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও তিনি নিজে এর প্রতিষ্ঠা দেখে যেতে পারেননি।

নওয়াব সলিমুল্লাহ ছিলেন একজন দানশীল ব্যক্তি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তিনি অকাতরে দান করতেন। ১৯০২ সালে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠায় তিনি তাঁর পিতার দেয়া পূর্বপ্রতিশ্রুতি অনুসারে এক লক্ষ বারো হাজার টাকা মঞ্জুর করেন। এছাড়া কৃষি, শিল্প খাতে, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, ছাত্রাবাস নির্মাণে এবং অন্যান্য যে কোনো ধরনের সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।

ঢাকার কারুশিল্পের উন্নয়নে তিনি প্রদর্শনীর আয়োজন করতেন। তাঁর প্রচেষ্টায় এ শিল্প নবরূপ পায়। কারুশিল্পের উন্নয়নে ১৯০৯ সালে পূর্ববঙ্গ সরকার গঠিত কমিটির তিনি একজন সদস্য ছিলেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৯০২ সালে সি.এস.আই, ১৯০৩ সালে নওয়াব বাহাদুর, ১৯০৯ সালে কে.সি.এস.আই এবং ১৯১১ সালে জি.সি.এস.আই উপাধি প্রদান করে।

১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি তাঁর ঘটনাবহুল জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল কলকাতায় ৯৩ চৌরঙ্গী রোডের বাড়িতে। ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় কলকাতায় আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন ওয়েলসলি স্কোয়ার পার্কে নামাজে জানাজা শেষে ১৭ জানুয়ারি নবাব সলিমুল্লাহর লাশ ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় দুটি জানাজা শেষে নবাবকে দাফন করা হয় বেগমবাজার পারিবারিক গোরস্তানে।

তার অকাল মৃত্যু নিয়ে রয়েছে নানা কৌতূহল, নানা প্রশ্ন, নানা জল্পনা-কল্পনা। অনুসন্ধানকারীদের অনুসন্ধিৎসু মন আজও খুঁজে বেড়ায় তার রহস্যময় মৃত্যু ঘটনার কারণ। কেন অকালে ঝড়ে গেলেন বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ প্রাণ, মুক্তির দূত, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রেরণা স্যার সলিমুল্লাহ? এ কথা বলতে দ্বিধা নেই ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ, ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠন এবং ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না হলে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকত কি না প্রশ্ন থাকে। তাই এটাই স্বতঃসিদ্ধ যে, বঙ্গভঙ্গ, মুসলিম লীগ গঠন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নবাব স্যার সলিমুল্লাহই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নপুরুষ।

নবাব স্যার সলিমুল্লাহ'র মৃত্যু প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ কবি ফারুক মাহমুদ বলেন, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে বড়লাটের সাথে নবাবের মতবিরোধ দেখা দেয় এবং উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে বড়লাট নবাবকে অপমানজনক কথা বলেন। যা তার সহ্য হয়নি। নবাবের সাথে সব সময় একটি ছড়ি থাকত। সে ছড়ি দিয়ে নবাব বড়লাটের টেবিলে আঘাত করেন। এ নিয়ে চরম তির্যক বাদানুবাদ শুরু হয়। এক পর্যায়ে বড়লাটের ইঙ্গিতে তার দেহরক্ষী নবাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এবং গুরুতর আহত হন। পরে নবাবের মৃত্যু হয়। নিশ্চিদ্র প্রহরায় নবাবের লাশ ঢাকায় আনা হয়। তার আত্মীয়স্বজনকেও লাশ দেখতে দেয়া হয়নি। ১৯১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি সামরিক প্রহরায় বেগম বাজারে তাকে দাফন করা হয়। (সরকার শাহাবুদ্দিন আহমদ : আত্মঘাতী রাজনীতির তিনকাল প্রথম খণ্ড, পৃ. ২২১)

মাত্র ৪৪ বছরের জীবনে সলিমুল্লাহ সর্বভারতীয় পর্যায়ে যতটুকু প্রভাব ফেলতে পেরেছিলেন তা তাঁর উত্তর ও পূর্বপুরুষদের কেউই পারেননি। তিনি নিজ জনগোষ্ঠী ও পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ বাংলাদেশ ভূখণ্ডের প্রতি বিশেষ সহানুভূতিশীল ছিলেন। তাঁর আত্মত্যাগ যুগ যুগ স্মরণ করবে আপামর জনতা। নবাব স্যার সলিমুল্লাহ'র ১০৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা।

লেখক : কলাম লেখক ও রাজনীতিক, মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন


পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ


 
দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক ও দ্বিকক্ষ সংসদে একমত: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক ও দ্বিকক্ষ সংসদে একমত: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় পদ্ধতির ব্যাপারে একমত রাজনৈতিক দলগুলো। সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন বাড়িয়ে ...
সাবেক মেয়র আইভীকে নেওয়া হলো কাশিমপুর কারাগারে
সাবেক মেয়র আইভীকে নেওয়া হলো কাশিমপুর কারাগারে
গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) সাবেক মেয়র ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র ...
গুম হওয়া বিএনপি নেতার বাসায় পরোয়ানা, পুলিশের এসআই প্রত্যাহার
গুম হওয়া বিএনপি নেতার বাসায় পরোয়ানা, পুলিশের এসআই প্রত্যাহার
দীর্ঘ অনেক বছর ধরে গুম থাকা বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে গিয়েছিল তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরে ...
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে সরকার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে সরকার
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে সরকার। শুক্রবার (৯ মে) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক বিবৃতিতে ...
মোটরসাইকেল জব্দ করায় থানায় হামলা, ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
মোটরসাইকেল জব্দ করায় থানায় হামলা, ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
শরীয়তপুরে মোটরসাইকেল জব্দ করাকে কেন্দ্র করে নড়িয়া থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানা পুলিশের ...
মোটরসাইকেল জব্দ করায় থানায় হামলা, ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
মোটরসাইকেল জব্দ করায় থানায় হামলা, ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
শরীয়তপুরে মোটরসাইকেল জব্দ করাকে কেন্দ্র করে নড়িয়া থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানা পুলিশের ...
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ও আ.লীগ নিষিদ্ধের ইস্যুতে মুখ খুললেন আইন উপদেষ্টা
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ও আ.লীগ নিষিদ্ধের ইস্যুতে মুখ খুললেন আইন উপদেষ্টা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত ৩টার পর থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ...
উমর গুলকে ‘না’ বিসিবির, কোচ হয়ে আসছেন কে?
উমর গুলকে ‘না’ বিসিবির, কোচ হয়ে আসছেন কে?
বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ আন্দ্রে অ্যাডামসের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই পেসার মাত্র কয়েক মাস আগেই বাংলাদেশ ...
স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১৯ ইসরায়েলি সৈন্য
স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১৯ ইসরায়েলি সৈন্য
দক্ষিণ গাজায় দুটি ইসরাইলি সামরিক ইউনিটকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে ইসরায়েলের ১৯ সৈন্য নিহত হয়েছে ...
১০
মুরগিসহ সবজির বাজারে আগুন
মুরগিসহ সবজির বাজারে আগুন
ফের বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। ধিরেধিরে সবজির দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে মুরগির দামও। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ...
 
চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসকদের সাথে অসদআচারণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসকদের সাথে অসদআচারণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র নামধারী কতিপয় যুবকের চিকিৎসকদের সাথে অসদআচারণের প্রতিবাদ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিকিৎসক সমাজ। সোমবার (৫ মে) ...
গড্ডিমারী আলিয়া মাদরাসার উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা
গড্ডিমারী আলিয়া মাদরাসার উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী আলিয়া মাদরাসার পুন:প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের লক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বুধবার বিকালে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে প্যানেল ...
কড়াইল বস্তির চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণে এখন যারা
কড়াইল বস্তির চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণে এখন যারা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজধানীর বনানী থানাধীন কড়াইল বস্তির প্রভাবশালী কিছু নেতা এলাকা থেকে পালালেও চাঁদাবাজি, ...
১৭বছর পর ভোটের আমেজ পেয়েছে টুমচরের বিএনপির নেতাকর্মীরা
১৭বছর পর ভোটের আমেজ পেয়েছে টুমচরের বিএনপির নেতাকর্মীরা
বিগত ১৭বছর ভোট থেকে বঞ্চিত ছিলো বিএনপির নেতাকর্মীরা। ভোটের যে স্বাদ তা ভোগ করতে পারে নি তারা। তাই তো দীর্ঘদিন ...
অষ্ট্রেলিয়া নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
অষ্ট্রেলিয়া নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল নিউ সাউথ ওয়েলস, অষ্ট্রেলিয়া শাখার আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভা সিডনির লাকেম্বা লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নবগঠিত ...
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নেপথ্যে কী আছে
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নেপথ্যে কী আছে
গত ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। মূলত পর্যটকদের নিশানা করা হয়েছিল। এই ঘটনার ...
দুরবস্থায় ৬০০ বিজ্ঞানী
দুরবস্থায় ৬০০ বিজ্ঞানী
ক’দিন ধরেই উত্তাল বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বাপশক)। দু’মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারী-বিজ্ঞানীরা। ১১ দফা দাবিতে টানা কর্মসূচি পালন ...
লন্ডন থেকে ঢাকার পথে খালেদা জিয়া
লন্ডন থেকে ঢাকার পথে খালেদা জিয়া
উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রায় চার মাস যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান শেষে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।বাংলাদেশ সময় ...
মানবিক করিডোর: বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব
মানবিক করিডোর: বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব
পৃথিবীর সা¤্রাজ্যবাদী, শক্তিশালী ও বৃহৎ শক্তিগুলো যখন যা চায় জাতিসংঘ নামক প্রতিষ্ঠান মূলতঃ তাই করতে বাধ্য হয়। বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর ইচ্ছার ...
১০
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা
নিজেদের মধ্যে একের পর এক সংঘর্ষ-মারামারিতে জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বেপরোয়া আচরণে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র বিশৃঙ্খল ও নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা। পান ...
সম্পাদক ও প্রকাশক: ইউসুফ আহমেদ (তুহিন)
প্রকাশক কর্তৃক ৭৯/বি, ব্লক বি, এভিনিউ ১, সেকশান ১২, মিরপুর, ঢাকা ১২১৬ থেকে প্রকাশিত ও ৫২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, ঢাকা ১১০০ থেকে মুদ্রিত
বার্তাকক্ষ : +৮৮০১৯১৫৭৮৪২৬৪, ই-মেইল editor@natun-barta.com, Web : www.Natun-Barta.com.com