![]() ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, জনগণের রায়কে বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার। ‘যে কোনো দলের তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হলে দরকার একটি জবাবদিহিমূলক সরকার, দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে মনে হয় এরই মধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান রেখে তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা আবারও বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তিনি বলেন, জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সংস্কার নিয়ে সময় ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কারও কোনো ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় আমরা দেখেছি তারা কীভাবে আদালতকে অবজ্ঞা করেছে। আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করেছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশের মানুষ আশা করেছিল আইনের প্রতি সম্মান থাকবে। আমরা দেখেছি আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই স্বৈরাচারের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চলছে। সমাবেশে উপস্থিত সবার উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় না, যারা আদালতের নির্দেশকে অবজ্ঞা করে, তাদের কাছ থেকে আমরা কতটুকু সংস্কার আশা করতে পারি? পুঁথিগত সংস্কারের চেয়ে ব্যক্তির মানসিকতার সংস্কার অনেক বেশি জরুরি। নর্থ কোরিয়ার সংবিধানে লেখা রয়েছে- ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অফ নর্থ কোরিয়া। সুতরাং কী লেখা আছে তারচেয়েও বেশি জরুরি, মেনে চলা। ইশরাকের ক্ষমতা গ্রহণ বা শপথ গ্রহণে বাধা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আমরা আবারও স্বৈরাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাচ্ছি। তারেক রহমান বলেন, নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যই কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান পুঁজি। তাই তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, জনগণের বিশ্বাস ভালোবাসা নষ্ট হয় এমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না। গণতন্ত্রের পক্ষের জনগণকে দয়া করে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। যদি আপনাদের কেউ রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকতে চায়, তাহলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে আসুন। নির্বাচন করুন। ভবিষ্যতে যদি জনগণের রায় পান তাহলে সরকারে যোগদান করুন। তিনি বলেন, গত দেড় দশকে ভোটার তালিকায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি নতুন ভোটার সংযুক্ত হয়েছেন। এই নতুন ভোটাররা আজ পর্যন্ত একটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়ে পছন্দমত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ পাননি। কথিত পলাতক স্বৈরাচারের কাছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা নির্বাচন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। সুতরাং সংস্কারের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের দৃশ্যমান প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। কিন্তু আজ আমরা দেখেছি ১০ মাস পার হয়ে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করছে না। ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশের জনগণের সরাসরি ভোটে জবাবদিহিমূলক ও দায়বদ্ধমূলক একটি সরকার দ্রুত দেখতে চায় জনগণ।’ ‘তরুণ প্রজন্মের ভাইয়েরা ও দেশবাসী, আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য আপনারা প্রস্তুতি শুরু করুন। কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে কারা প্রতিনিধি হবে, সেটা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়ে আপনারা নির্বাচিত করুন।’ বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জনগণের কাছে যান। তাদের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করুন। তাদের প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করুন। জনগণের মন জয় করুন। কারণ, জনগণই বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। বিএনপির তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদল যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে। যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। |