![]() সোহাগ মৃধার ‘কালো মানিক’ গ্রহণ করেননি খালেদা জিয়া
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কুরবানির পশু উপহার দেয়ার জন্য সোহাগ মৃধা ও তার পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া, সোহাগ মৃধা ও তার পরিবারের জন্য ঈদের বিশেষ উপহার পাঠিয়েছেন দলের চেয়ারপারসন। এর আগে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রাম থেকে কালো মানিক নিয়ে ঢাকা আসেন কৃষক সোহাগ মৃধা। ২০১৮ সালের শেষ দিকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের চৈতা বাজার থেকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভী কিনেছিলেন সোহাগ। সেই গাভীর বাছুরই আজকের এই কালো মানিক। ছয় বছরের যত্ন আর কঠোর পরিশ্রমে আজ মানিক এক বিশাল ষাঁড়ে পরিণত হয়েছে। পশুটির ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। গত কুরবানির বাজারে ১০ লাখ টাকা দাম উঠেছিল। কিন্তু এ বছর দাম কমে ৮ লাখ বলায় সোহাগ সিদ্ধান্ত নেয় তিনি আর মানিককে বিক্রি করবেন না। এটা নেত্রী খালেদা জিয়াকে কুরবানির জন্য উপহার হিসেবে দেবেন। ঢাকায় ষাঁড়টি পাঠাতে কয়েক দিন ধরেই চলছে প্রস্তুতি। ভাড়া করা হয়েছে দুটি মিনি ট্রাক, খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা। দলের প্রতীকে তৈরি করা হয়েছে ব্যানার, বাদ্যযন্ত্র, শোভাযাত্রার আয়োজন। গ্রামজুড়ে যেন উৎসবের আমেজ। এ বিষয়ে সোহাগ বলেন, ভাইরালের জন্য না, মন থেকে চাই। নেত্রীর কুরবানিতে যদি যায় আমার মানিক, তবেই শান্তি। এটা লাভের হিসাব না- শুধু ভালোবাসা। শেখ হাসিনাকে এক কৃষক গরু উপহার দিয়েছিলেন- ওটা দেখে ইচ্ছা হয়েছিল, আমিও একদিন নেত্রীকে দেবো। আজ সেই সুযোগ এসেছে। যদি কবুল হয়, তবেই আমার স্বপ্ন পূর্ণ হবে। প্রথমে অনেকে ভেবেছিল, সোহাগ বাড়াবাড়ি করছে। কিন্তু এখন তার উঠোনে মানুষের ভিড় করছেন। প্রতিবেশী মতিয়ার মিয়া বলেন, প্রথমে ভাবছিলাম, মজা করছে। এখন বুঝি- এটা শুধু গরু না, এক কৃষকের ত্যাগ আর রাজনৈতিক ভালোবাসার প্রতীক। সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, ছোটবেলা থেকেই বিএনপি ভালোবাসে। কয় বছর ধইরা বলে আসতেছে, এই গরু নেত্রীরে দিব। সংসারে কষ্ট গেল, তবু মানিকরে ঘরের মানুষ কইরা রাখছি। আজ ঢাকায় যাইতেছে, গোয়ালঘর খালি হইব। চোখে পানি আসে, তবু মনে শান্তি- নেত্রী যদি গ্রহণ করেন, আমরা ধন্য। সোহাগ জানেন না, আদৌ বেগম খালেদা জিয়া এই উপহার গ্রহণ করবেন কি না। তিনি এটাও জানেন না, ঢাকায় গিয়ে ফেরত পাঠানো হবে কি না। কিন্তু তার ভালোবাসা কমবে না, কারণ কালো মানিক তার চোখে কেবল এক পশু নয়- এটি তার রাজনৈতিক বিশ্বাস, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার প্রতীক। কথোপকথনের শেষ পর্যায়ে সোহাগ বললেন, ভালোবাসা দিয়া হিসাব কষা যায় না ভাই। নেত্রী আমার এ ভালবাসা গ্রহণ করলে এটাই আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোহাগ আমাদের একনিষ্ঠ কর্মী। প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। ভাবছিলাম আবেগে বলছে। কিন্তু এখন বুঝি- এটা তার বিশ্বাস আর ভালোবাসা থেকে আসা। রাজনীতিতে এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আজকাল খুবই বিরল। আমরা গর্বিত। বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী থেকে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছে কালো মানিক। সঙ্গে সোহাগের ছয় বছরের ত্যাগ, পরিবারের ভালোবাসা, আর প্রিয় নেত্রীর প্রতি এক নিঃস্বার্থ শ্রদ্ধা। এই শোভাযাত্রা শুধুই এক ষাঁড়ের যাত্রা নয়- এটা এক কৃষকের অন্তরের কুরবানি। |