![]() পুলিশ পাহারায় অফিস করলেন এনবিআর চেয়ারম্যান
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() রোববার (১ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে প্রবেশ করেন তিনি। প্রায় ৩ ঘণ্টা অফিস করে কড়া নিরাপত্তায় অফিস থেকে বের হন এনবিআর চেয়ারম্যান। তার অফিসে আসা থেকে শুরু থেকে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এনবিআরের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দুপুর থেকেই চেয়ারম্যানের কার্যালয় এবং ভবনটির সামনে পুলিশের সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি সেখানে দেখা যায়। এমনকি চেয়ারম্যান দপ্তরের সামনে অন্তত ৬ জন পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বিকেলে সেনাবাহিনীর একজন মেজরের নেতৃত্বে একটা দলকে তার কার্যালয়েও ঢুকতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে এনবিআরের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যান নিজ কার্যালয়ে অফিসিয়াল বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন। এ সময় এনবিআরের আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের সকল সদস্য তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে কেউই দীর্ঘ সময়ে অবস্থান করেন নাই। এসময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কথা জানা যায়নি। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতা-কর্মীরা সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছেন। আন্দোলনের সময় চেয়ারম্যানকে আর রাজস্ব ভবনে দেখা যায়নি। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব হিসেবে সেখানেই তিনি এতদিন অফিস করে আসছিলেন। তবে বাজেটের কাজ গোছাতে এনবিআর থেকে সচিবালয়ে কাগজ পত্র নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। গত ২৯ মে এক সংবাদ বিবৃতিতে আবদুর রহমান খানকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সংস্কার ঐক্য পরিষদ জানায়, বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিস্থিতিকে জটিল করেছেন। তার অবস্থান অতি নেতিবাচক ও ষড়যন্ত্রমূলক না হলে এই সমস্যা অনেক আগেই সুরাহা হয়ে যেত। এই প্রেক্ষিতে বর্তমান চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়ে তাকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পরিষদ। একই সঙ্গে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাকে স্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এনবিআর বিলুপ্ত করে নতুন রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫ জারির প্রতিবাদে ১৪ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে এসেছে। ২৫ মে রাতে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জারি হওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়, এনবিআর বিলুপ্ত করা হবে না, বরং এটিকে আরও শক্তিশালী ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে রাজস্ব নীতি প্রণয়নের জন্য একটি নতুন স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গঠনের পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়। এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে পরিষদ ২৬ মে থেকে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় এবং সব দপ্তরে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। তবে পরিষদের দ্বিতীয় দাবিটি বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ ২৯ মে পর্যন্ত পূরণ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে ২৬ মে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৯ মের মধ্যে এনবিআর বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার সময়সীমা বেঁধে দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। ২৫ মে রাতে এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেয় অর্থমন্ত্রণালয়। আর সেই আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঐক্য পরিষদ। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণের ব্যাপারে কোনো কিছুই জানায়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পরপরই এক সংবাদ বিবৃতিতে জানায় এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দাবিতে চলা আন্দোলন কর্মসূচি ১৩ দিন পর কলম বিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত ১৩ মে আগারগাঁও এনবিআরের সামনে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে অনুসারে ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও ১৯ মে কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। আলোচনার আশ্বাসে ২০মে আন্দোলন স্থগিত রেখে ২১ মে থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসে। গত ২২ মে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর গত ২৪ মে থেকে পূর্ণাঙ্গ কর্ম বিরতি পালন করে ঐক্য পরিষদ। |