![]() বিএনপি অফিস ভাঙচুর, সাকিবের বাবাকে প্রধান আসামি করে মামলা
নতুন বার্তা, মাগুরা:
|
![]() ওই মামলায় মাগুরা ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজাসহ ৭৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন প্রায় ২০০ শত জন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মামলার আসামিরা পরস্পর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী। তারা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় ঘটনার দিন গত ৪ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে হাতে বোমা, ছররাগান, পিস্তল, শটগান, বন্দুক, রামদা, ছ্যানদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, শাবল, কন্ট্রেল বোমা, প্লাষ্টিকের টব ভর্তি পেট্রল নিয়ে মাগুরা শহরের ইসলামপুর পাড়াস্থ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি অফিসের সামনে এসে হামলা চালায়। মামলায় ১ নং আসামি সাকিবের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজার বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বিএনপি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি ছাড়াও এই মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাখারুল ইসলাম শাকিল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মাকুল, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকিব হাসান তুহিন প্রমুখ। অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা অফিস কক্ষের ভেতরে থাকা প্লাস্টিকের ৫০টি ও কাঠের ১০টি চেয়ার, ৩টি কাঠের টেবিল এবং স্টিলের আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এ সময় কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মাগুরা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রয়াত হাবিবুর রহমানের বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ওই বাড়ির ছেলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব কিশোর। দলীয় কার্যালয় ও ওই বিএনপি নেতার বাড়ির ভাংচুর ও লুটপাটে আনুমানিক ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী। মামলা পরবর্তী সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপির ইসলামপুর পাড়া কার্যালয়ের একতলা ভবনে ভাঙচুর ও আগুনে পোড়ার কালো দাগ রয়েছে। আগস্টের ওই ঘটনার পর কার্যালয় আর মেরামত করা হয়নি। ওই ভবনের সামনে অস্থায়ী ছাউনি টাঙিয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এখন দলীয় কোনো কর্মসূচি হলে ভবনের সামনে ফাঁকা জায়গায় তা পালিত হচ্ছে। এখন আর ভেতরে কেউ বসেন না। তবে এ মামলায় বেশ কয়েকজন আসামি নাম প্রকাশের শর্তে দাবি করেছেন, ‘তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। এমনকি তারা কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যাননি। তারা ব্যবসা বা অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত।’ তারা দাবি করেছেন, ‘হয়রানি করা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। এখন ব্যাক্তিগত প্রতিহিংসাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।’ মামলার বাদী মো. আবু তাহের (৩১) মাগুরা সদর উপজেলার পাথরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন কর্মী ও ওই কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মো. আবু তাহের বলেন, আমি এখনো কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করে আসছি। ঘটনার দিনও ছিলাম। দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করতে দেরি হয়েছে। ঘটনার সময় যারা ছিল তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে’। তবে বিএনপির ওই কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলার বাদী এক বিএনপি নেতার বাড়িতে কাজ করেন এদিকে মামলার বিষয়ে জানতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে যারা হামলা করেছিল তাদের সবাইকে আইনে আওতায় আনতে হবে। তবে এর সঙ্গে জড়িত নয় এমন কাউকে আসামি করলে সেটা দুঃখজনক ব্যপার।’ মামলার বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী জানান, ‘৪ আগস্টের ঘটনায় ওই মামলা হয়েছে। তবে এই মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ |