![]() গাজার উদ্দেশ্যে ত্রাণের নৌকা নিয়ে রওনা দিলেন গ্রেটা থুনবার্গ
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() ইসরায়েলের নৌ অবরোধ উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উদ্দেশ্যে রোববার (০১ জুন) ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর কাতানিয়া থেকে ত্রাণবাহী একটি আন্তর্জাতিক ফ্লোটিলা যাত্রা শুরু করেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েল। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ, ‘গেম অব থ্রোনস’ খ্যাত অভিনেতা লিয়াম কানিংহ্যাম, ফ্রান্স-ফিলিস্তিনি ইউরোপীয় এমপি রিমা হাসান, ব্রাজিলীয় কর্মী থিয়াগো আভিলা ও আরও একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজটি পরিচালনা করছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)—যারা দীর্ঘদিন ধরে গাজা উপকূলে ইসরায়েলের আরোপিত সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে আসছে। যাত্রার আগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, মানবতা থেমে গেলে আমরা হেরে যাব। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কারণ একবার থেমে গেলে আমরা আমাদের মানবতা হারিয়ে ফেলি। এই মিশন যত বিপজ্জনকই হোক, এটি সেই ভয়াবহ নীরবতার চেয়ে কম নয়—যেখানে লক্ষ প্রাণ নিঃশেষ হচ্ছে। আয়োজকরা দাবি করছেন, এটি কোনো দান-খয়রাত নয়; বরং একটি রাজনৈতিক ও অহিংস প্রতিবাদ। তাদের ভাষায়, ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ ও যুদ্ধাপরাধের’ বিরুদ্ধে এটি একটি আন্তর্জাতিক বার্তা। অন্যদিকে, ইসরায়েল এই অভিযোগ ‘গণহত্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির দাবি, গাজায় নৌ অবরোধ একটি ‘বৈধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা’, যার মাধ্যমে হামাসের কাছে অস্ত্র পাচার রোধ করা হয়। ‘ম্যাডলিন’ নৌকাটিতে সীমিত কিছু প্রতীকী ত্রাণসামগ্রী থাকলেও, এই যাত্রার তাৎপর্য মূলত রাজনৈতিক ও মানবিক। অংশগ্রহণকারীদের ভাষায়, এটি ‘বিশ্বের নীরবতা ভাঙার প্রয়াস’। থিয়াগো আভিলা বলেন, আমরা শুধু সমুদ্রপথে অবরোধ ভাঙছি না, বরং এটি একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক আন্দোলনের অংশ—যেটির লক্ষ্য স্থলপথেও অবরোধ চ্যালেঞ্জ করা। রাফাহ সীমান্ত অভিমুখে যে ‘গ্লোবাল মার্চ টু গাজা’ এগোচ্ছে, সেটিও এরই অংশ। এর আগে গত জুনে ‘কনসায়েন্স’ নামের ফ্লোটিলা এক ড্রোন হামলার শিকার হয়ে যাত্রা ব্যর্থ হয়। আয়োজকরা সেই ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করলেও, দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। এবারের ফ্লোটিলা নিয়ে এখনো ইসরায়েল কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। জাতিসংঘ সম্প্রতি সতর্ক করেছে—গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘তথ্য নয়, বাস্তবতা’ হয়ে উঠছে। যদিও ইসরায়েল কিছুটা অবরোধ শিথিল করেছে, তবে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই ত্রাণ ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই অভিযানের মধ্য দিয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক মহলে গাজা সংকট নিয়ে চাপ বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এটি কেবল মানবিক সহানুভূতির প্রকাশ নয়, বরং এক ধরনের কূটনৈতিক বার্তাও—ইসরায়েলের অবরোধ আর মেনে নেওয়া হবে না। |