/ মতামত / উন্নয়নশীল বিশ্বের ঋণ সংকট ও বৈশ্বিক বাস্তবতা
উন্নয়নশীল বিশ্বের ঋণ সংকট ও বৈশ্বিক বাস্তবতা
রায়হান আহমেদ তপাদার:
|
অর্থনৈতিক সঙ্কট হলো মূলত এমন এক পরিস্থিতি যেখানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সম্পদের দ্রুত অবমূল্যায়ন ঘটে। ১৯শতক ও ২০ শতকের শুরুতে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সঙ্কট, শেয়ারমার্কেট সঙ্কট, মুদ্রা সঙ্কট ইত্যাদি নানা কারণে সঙ্কটের সূচনা হয়। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে যদিও সম্পদের দ্রুত অবমূল্যায়ন ঘটে থাকে কিন্তু এটি মূলত মন্দা কিংবা মহামন্দা সৃষ্টির পূর্বাভাস। যার কারণে থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক সঙ্কট পুরো দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ায় অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটিয়েছিল। প্রাক-মহামন্দা যুগের সাথে সবচেয়ে বড় পার্থক্য এবং আমরা আজ মার্কিন অর্থনীতিতে যা দেখছি তা হলো মুদ্রাস্ফীতি। অধিকাংশ দেশেই মুদ্রাস্ফীতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। বিগত ৪০ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এত বেশি মুদ্রাস্ফীতি ছিল না। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি গড়ে ৮ শতাংশের ওপরে উঠে গিয়েছে। তাছাড়া, আমদানি ব্যয় মেটাতে গিয়ে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সতর্ক বার্তা ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করছে। বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইতোমধ্যে মন্দা- ক্রান্ত হয়ে পড়েছে,যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে তা ঘোষণা দেয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮৫৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৩৪ বার অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছে। কিন্তু অতীতের মন্দার চেয়ে এবারের মন্দার রূপ ভিন্ন। বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি সবাইকে দিশেহারা করে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা মূল্যায়ন করার সময় ধনী দেশগুলোর দিকে মনোনিবেশ করার এক ধরনের প্রবণতা রয়েছে বিশ্লেষকদের মধ্যে। এ প্রবণতা খুব একটা সুখকর নয়। ২০০৮-০৯ সালের মহামন্দা থেকে আমরা দেখেছি, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলো আসে উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে। কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশ তার জনসাধারণের ব্যয় বাড়াতে বাধ্য হয়েছিল। তবুও উন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কাছে ভ্যাকসিন, ওষুধ এবং যন্ত্রপাতি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ থাকলেও নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের অর্থনীতি মহামারী এবং পরবর্তী খাদ্য ও শক্তি সংকট মোকাবেলায় ব্যাপকভাবে ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। এ ঋণ কয়েক ডজন দেশকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো এ অবস্থার শিকার হয়েছে বেশি।বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সার্বভৌম ঋণ সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলো। তাদের বাহ্যিক ঋণের পরিমাণ ২০২২ সালে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৮৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল এবং এ ঋণ ২০২৩-২৪ সালে ৪০ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হয়। ঘানা ও জাম্বিয়া এরই মধ্যে খেলাপি হয়েছে, ইথিওপিয়া সম্ভবত ২০২৪ সালের মধ্যে খেলাপি হয়ে যাবে এবং আর্জেন্টিনা ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোয় অভ্যন্তরীণ ঋণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়াও অভিবাসন সংকট আরো বাড়তে পারে এবং উন্নত বিশ্বজুড়ে ডানপন্থী জনতাবাদের উত্থান আরো গভীর হয়ে উঠতে পারে। তবে পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। উন্নয়নশীল বিশ্বের ঋণ সংকট মোকাবেলার জন্য শুধু আধুনিক গবেষণা যথেষ্ট নয়। বরং এর চেয়ে আরো বেশি কিছু প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের মতো বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। কলম্বিয়ার মেডেলিনে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের (আইইএ) ২০তম বৈশ্বিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। ত্রিবার্ষিক এ আয়োজন সারা বিশ্বের পণ্ডিত ব্যক্তিদের একত্রিত হয়ে অর্থনৈতিক চিন্তার সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা বিনিময়ের সুযোগ তৈরি করে। এবারের সম্মেলনে আগের কিছু বিষয়ের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি হিসেবে দেখা হয়েছে। যেখানে গ্লোবাল সাউথের ক্রমবর্ধমান ঋণ সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।আইইএ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৫০ সালে। এর প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন জোসেফ শুম্পেটার। ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও এর নেতৃত্ব দিয়েছেন। কভিড-১৯ মহামারী এবং এর দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর এক বিরাট ধাক্কা হয়ে আসে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা শৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ক্রমবর্ধমানভাবে চাপের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াইয়ে আবারো বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার মেঘ তৈরি হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া আইইএ সম্মেলনে এসব বিষয়কে বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য ভয়ংকর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়েছে। এ বছরের সম্মেলনে শ্রম, মজুরি ও বৈষম্যের ওপর ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবের কথা আলোচনায় এনেছেন অনেক আলোচক। অন্যরা বিশ্বায়নের পরিবর্তিত রূপ, একমুখী থেকে বহুমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় স্থানান্তর এবং জাতীয়তাবাদের উত্থানের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অবক্ষয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করেছিলেন। তবে সবাই এ বিষয়ে একমত যে বৈশ্বিক অর্থনীতি একটি মৌলিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির স্কলার ড্যানি কোয়াহ তার বক্তব্যে বিশ্ব অর্থনীতির মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রের স্থানান্তরিত করার চিত্র তুলে ধরেছেন। ১৯৮০ সালে করা তার নিজের গবেষণা এবং আরো কিছু গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তিনি তার আলোচনা পেশ করেছেন। ১৯৮০ সালে করা গবেষণায় তিনি দেখিয়েছিলেন, বিশ্ব অর্থনীতির মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রটি আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত। এ সময়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের আধিপত্য ছিল। পূর্ব এশীয় অর্থনীতির যাত্রা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক অভিকর্ষের বৈশ্বিক কেন্দ্র পূর্বদিকে সরে যেতে থাকে। ড্যানি কোয়াহ তার উপস্থাপনায় দেখিয়েছেন, ২০০৮ সালের দিকে বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রটি তুরস্কের ইজমিরের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল এবং ভারতীয় ও চীনা অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটি পূর্বদিকে অগ্রসর হয়েছে। তিনি দেখান, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির ভরকেন্দ্র ভারত ও চীনের মধ্যে এসে দাঁড়াবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য অনেক সুযোগ বয়ে আনবে, কিন্তু ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়িয়ে দেবে এবং নতুন হুমকির জন্ম দেবে। আরেকজন আলোচক সের্গেই গুরিয়েভ তার আলোচনায় দেখিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার একটি প্রধান চালক হিসেবে সামনে এসেছে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদ। তিনি বলেছেন, জনতাবাদী আন্দোলনের ক্রমবর্ধমান ধারা গণতান্ত্রিক শাসন, নাগরিক স্বাধীনতা এবং উদার বিশ্ব ব্যবস্থার জন্য একটি অস্তিত্বের হুমকি হতে পারে। সম্মেলনের আলোচক অ্যাডাম সেইডল তার উপস্থাপনায় উল্লেখ করেছেন, হতাশাগ্রস্ত পশ্চিমা ভোটারদের ডানপন্থী নেতাদের পক্ষ নেওয়ার প্রবণতা বিস্ময়কর। সেখানে রাজনীতিবিদদের পছন্দের নীতিগুলি হয়ত তারা যে সমস্যার সমাধান করতে চান তা আরও বাড়িয়ে তুলবে। তিনি আরও বলেন, একটি আর্থিক সংকট পশ্চিমা রাজনীতিতে অতি-ডানপন্থী কর্তৃত্ববাদীদের অবস্থানকে মজবুত করতে পারে। এবং এটি ঘটলে তা বিরাট বড় সামাজিক সংকটের জন্ম দেবে। একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার ভবিষ্যদ্বাণী সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতি ২০২৩ সালে সফলভাবে একটি মন্দা এড়িয়ে গেছে। যদিও কিছু অর্থনীতিবিদ ২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতি বড় কোনো সংকটে পড়বে না বলে আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন তবে এ ধরনের আত্মতুষ্টি বিপথগামী হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে কি না, এটাই বিবেচ্য বিষয়। সাম্প্রতিক সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত এবং নতুন করে ঠান্ডা লড়াইয়ের সূচনা। এর ধাক্কায় খনিজ তেলের বাজারে এবং কিছু খাদ্য ও ভোগ্যপণ্যের দামের ক্ষেত্রে উথাল-পাথাল ঘটতে পারে। বিশ্ব যদি একযোগে পারস্পরিক ভাবে প্রতিযোগী ক্ষেত্রে ভেঙে যায়, তা হলে এমন সমস্যা অব্যাহত থেকে যাবে। জলবায়ুগত পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রেই আবার মূল্যবৃদ্ধি ঘটায়। সুতরাং চাহিদায় ঘাটতি থাকলেও পণ্যমূল্য বাড়বেই। এমন পরিস্থিতিতে যদি আর্থিক নীতির কাছে উত্তর চাওয়া যায়, তা হলে নীরবতা ছাড়া কিছু মিলবে না। যাঁরা এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁরা দীর্ঘমেয়াদের প্রেক্ষিতে মূল্যবৃদ্ধির স্লোগান তুলে ঘটনার আসল গুরুত্ব লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন। কিন্তু এতে যা ক্ষতি হবে, তাকে লুকোনো যাবে না। আমেরিকা এবং চিনের পরিস্থিতি ভাল হলেও বিশ্ব অর্থনীতির গতিতে মন্থরতা নজর এড়াচ্ছে না। ঋণ মহার্ঘ হয়ে পড়ায় ব্যাঙ্ক এবং সংস্থাগুলির হিসেব-নিকেশের খাতায় যে চাপ পড়ছে এবং তা থেকে সমস্যার পুর্বাভাস যে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে, তা অনস্বীকার্য। পুঁজির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে তাল রেখে অধিকতর মুনাফার আশায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রটিও আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত মাত্রায় ঋণের বোঝা যে সব দেশের ঘাড়ে রয়েছে, তারা বর্ধিত হারে সুদ গুনতে গিয়ে অন্যদের থেকে বেশি বিপন্ন বোধ করছে। বিশ্ব জুড়ে পুঁজি নিরাপত্তা খুঁজতে থাকায় প্রান্তিক বাজারগুলিতেও ঘোলাজল তৈরি হচ্ছে। কারণ, তার পিছনে কাজ করছে আর্থিক পুঁজির উপর বিবর্ধিত সুদের হার। এর ফলে ভারতের বাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।বিভিন্ন দেশে সরকারি ঋণপত্রের দাম রেকর্ড পরিমাণ স্পর্শ করেছে। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি তাদের আদেশনামা বলবৎ রাখে এবং ২ শতাংশ হারে মুদ্রাস্ফীতিকে লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে স্থির রাখে, তা হলে ঋণপত্রের দাম আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলি একযোগে এই মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে। কারণ, ইতিমধ্যেই বর্ধিত মূল্যের উপর আরও বেশি দাম চড়তে থাকলে গোটা অর্থনীতিতে তার চাপ অনুভূত হবে। মোদ্দা কথায়, তারা এ কথা মেনেই নিয়েছে যে, নির্দেশ বলবৎ রাখার জন্য যে পরিকাঠামো বা প্রয়োগকৌশল প্রয়োজন, তা তাদের হাতে নেই। সুতরাং তারা এক রকম অবান্তর কথাবার্তা বলে পাশ কাটাতে চাইছে।আর্থিক নীতিও এই মুহূর্তে একটি বাঁকের মুখোমুখি। বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে আছে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অর্থনীতির সূচকগুলো অস্থির হয়েছে। দেখা দেয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কমে টাকার মান, বৈদেশিক মুদ্রার মজুতও প্রতি মাসে কমতে থাকে আশঙ্কাজনকভাবে। কিন্তু তখনো নীতি নির্ধারকেরা প্রতিনিয়ত বলেছেন যে বহির্বিশ্বের নানা ঘটনাপ্রবাহের কারণে অর্থনীতির ওপর এই চাপ। এই সংকট আমদানিকৃত, দেশের অভ্যন্তরীণ কারণে ঘটছে না। একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। কিন্তু এখন সেই বাংলাদেশ ব্যাংকই বলছে, দেশের অর্থনীতি সংকটে পড়েছে কেবল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নয়। বরং এর জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ কারণও দায়ী। লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক |