/ ফিচার / গৃহসজ্জায় ধর্মীয় স্থান
গৃহসজ্জায় ধর্মীয় স্থান
হোসনে আরা হ্যাপি:
|
স্থাপত্য শিল্প প্রয়াস, চেতনা ,জন্ম থেকে অন্যান্য শিল্প-চিন্তা প্রতিফলিত হয়েছে, তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গে সৌন্দর্যনুভ‚তির বিন্যাস বৈচিত্র্য, স্থাপত্য শিল্পের প্রকাশ বা উন্মোচন আয়তনের দিক থেকে বিরাট শুধু বিরাটই নয় সীমাহীন বলা যায়। দৃষ্টির প্রতিটিস্থানে এর প্রয়োগ সীমাহীন। মানুষ তার ঘর সাজাতে স্থপতি কে ডাকে, সুন্দর পেতে চায় পরিবেশকে কেন? প্রয়োজন কি? এখানে এর প্রয়োজন পার্থিব বস্তুতে নয়, আমার আপনার সৌন্দর্যনুভ‚তিকে ভালবাসতে,অনুভব করতে বা হ্যিক অভ্যন্তরীন দুটো ব্যাপারেই সচেতনয়তা বা রুচিতে আপোশহীন মানুষ সৃষ্টি করে নান্দনিক সৌন্দর্য।
অভ্যন্তরীন সৌন্দর্য এখন বিলাশ বহুল প্রতিটি ভবনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরন হয়ে দাড়িয়েছে। আর সেই আভ্যন্তরীন সৌন্দর্য যদি ধর্মীয় স্থানকে প্রাধ্যন্য দিয়ে করা হয়, তাহলে তো কথাই নেই! প্রতিটি ধর্মের অনুসারী তাদের ধর্মীয় স্থানকে গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে নকশা করেছে। বর্তমানে ধর্মীয়স্থান নকশা করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ এই প্রধান চার ধর্মের মানুষ কিভাবে তাদের গৃহসজ্জায় ধর্মীয় স্থানকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করছে সেটা অলোচ্য বিষয়। ব্যক্তিগত অভয়রান্য প্রতিটি জন্য একটি শান্ত পরিবেশ, ভঙ্গি এক গ্রতা ও গোপনীয়তা প্রয়োজন। সেই কথা গুলো মাথায় রেখে স্থপতিরা নকশা প্রনয়ন করে (প্রার্থনা কক্ষের প্রধান উপাদান শান্তি ও পবিত্রতা রক্ষা করা)। কক্ষ সজ্জা (ইসলাম ধর্ম): শান্তি ও পবিত্রতার ধর্ম ইসলাম সেই সাথে মনোরম পরিবেশ কোন প্রাণী বা প্রতিকৃতি ছবি না রাখা। ঘরের দেয়াল, মেঝে ও ছাদ হলো আলোচ্য বিষয়। প্রার্থনা কক্ষ অবশ্যই অন্য লিভিং বা ডাইনিং অর্থ্যাৎ, কোলাহল স্থান হতে দূরত্ব রাখতে হবে। কক্ষের আকার আকৃতি যেমনই হোক না কেন অবশ্যই ওয়েদার ফেন্ডলি কালার স্মুদি ও ইউনিক করা। মেঝেতে জায়নামাজের পাশে কুরআন শরীফ রাখার জন্য রেহাল বা আমপারা রাখা যেতে পারে। দেওয়ালের হাফ পরশনে কিছু আরবী হরফে সূরা বা আয়াত লেখা সৌন্দর্যের আরেকটি অংশে পরিনত হয়। দেওয়ালে কিছু সূরার পোষ্টার লাগানো ।মেহেরোব স্থাপন করা যেতে পারে পশ্চিম দিক (কিবলা) মুখি করে, যাতে দিক নির্দেশনা সহজ হয়। কালার কোডিং এর সাথে লাইট গুলো এমন মনোক্রম বেশী আলোকিত ও সৌন্দর্য বর্ধিত হয়। হিন্দু ধর্মের কক্ষসজ্জাঃ হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা তাদের ক‚ল বা বংশকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে সেই অনুসারে তাদের জাতের শ্রেণী ভেদ হিসাবে,দেব-দেবীর উপসনা বা পূজা ভিন্ন ভিন্ন হয়। যে যে দেব দেবীর পূজা করে সেই প্রতিমার আকৃতি বা ছবি স্থাপনা করা যেতে পারে। সেই সাথে বিভিন্ন প্রতিমার স্থানের প্রয়োজনীয় উপকরন সমূহ আলাদা আলাদা ধাপ/তাক করা যেতে পারে । ঘরের আকার আকৃতির কথা বিবেচনা করে স্পট লাইট,সেন্টারল ঝাড় বাতি লাগানো যেতে পারে। খ্রিষ্টান ধর্মের কক্ষসজ্জাঃ খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীরা যীশু খ্রীষ্ট্রের অনুসারী। তারা ধর্মীয়কক্ষে যীশুখ্রিষ্টের ষ্টাচু প্রদর্শদের মাধ্যমে স্থানটির আলাদা গুরুত্ব বহন করে। পাটা তনের একটি অংশে বেদী স্থাপন এবং তার পেছনে দেওয়ালের দিকে ক্রিস ক্রসের মাধ্যমে যীশু খ্রীষ্ট্রকে প্রদর্শন করা প্রার্থনার একটি জায়গায় নমনীয় গালিদা ব্যবহার করা যেতে পারে।সেই সাতে বাইবেল পাঠ করার জন্য উপযোগী বসার স্থান ও নির্বাচন করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এর কক্ষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক আলো নির্বাচন করা সেলিং কিছু স্পট লাইট ও ফোকাস লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। বৌদ্ধধর্মের কক্ষসজ্জাঃ ধর্মলম্বীরা গৌতম বৌদ্ধের অনুসারী গৃহসজ্জায় ধর্মীয় কক্ষে গৌতম বৌদ্ধেতর মৃতি স্থপন, দেওয়ালে মুরাল কামের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধকে খোদায় ও ছবি প্রদর্শন করে বেদী স্থাপনের জায়গার পাশে বিভিন্ন রকম পানির ফোয়ারা তৈরি করা পাটাতন স্থাপন পাথর ও কাকর ফেলা হচ্ছে। বেদী ও মূর্তির স্থানে উচ্চমানের আলোক সজ্জা, জায়গাটিকে আরো উচ্চ মার্গীয় অনুভ‚তির প্রভাব ফেলে। ঘরে পানির ফোয়ারা ও শীতলতা প্রকাশে মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভ‚তিকে ভেতর থেকে আরো বেশী জাগ্রত করে তোলে। মানুষের ধর্মের ভিন্নতা যাই সত্যি হোক না কেনো, গুরুত্ব ও শান্তির জায়গাটা সত্যিই তাৎপর্যময় ব্যবহারিক ও নান্দনিক দুটো সৌন্দর্যই ধর্মীয় স্থানে গুরুত্ব পূর্ণ পরিচয় বহন করে । হোসনে আরা হ্যাপি: প্রধান স্থপতি ও সি.ই.ও (ডিজাইন এন্ড আইডিয়া আর্কিটেক) (কনসালটেন্সি ফার্ম) |