/ সারাদেশ / জয়পুরহাটে রহস্যজনক ভাবে মন্দির থেকে মুর্তি চুরি
জয়পুরহাটে রহস্যজনক ভাবে মন্দির থেকে মুর্তি চুরি
আব্দুন নুর নাহিদ, জয়পুরহাট:
|
জয়পুরহাটের কালাইয়ে কুসুমসাড়া গৌরাঙ্গ মন্দিরের ১ একর ৩৩ শতাংশ দেবত্তর সম্পত্তি দখল নিয়ে একই গ্রামের দু’পক্ষের দীর্ঘদিনের দন্দ্বের জের ধরে এক পক্ষ অপর পক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেদের মন্দির থেকে ৪টি পিতলের মুর্তি সরিয়ে রেখে চুরির ঘটনা সাজিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া সম্পত্তি দখলের ঘটনায় এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগও দিয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে তার পরিষদে আগামী মঙ্গলবার উপস্থিত হতে বলেছেন। এক পক্ষ ওই শালিসে উপস্থিত না হওয়ার জন্য কৌশলে শনিবার দিবাগত রাতে মন্দির থেকে ৪টি পিতলের মুর্তি সড়িয়ে রেখে চুরির ঘটনা সাজিয়েছে বলেও অভিযোগ আছে। ওই ঘটনায় রোববার সকালে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দিন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালাই উপজেলার কুসুমসাড়া গ্রামে হিন্দুপাড়া গৌরাঙ্গ মুন্দির দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করে আসছে একই গ্রামের কালীদাস মহন্ত ও শুকুমার দাস মহন্তের পরিবার। নিয়ম অনুযায়ী মুন্দিরের নামে ১ একর ৩৩ শতাংশ দেবত্তর সম্পত্তি ভোগদখল করার কথা ওই দুই পরিবারের লোকজনদের। কিন্তু কুসুমসাড়া গ্রামের হিন্দুপাড়া কালীদাস মহন্ত মন্দিরের নামে দেবত্তর সম্পত্তির পুরোটাই দীর্ঘদিন ধরে নিজের দখলে রাখেন। দেবত্তর সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের দন্দ্ব অবশানের জন্য একই গ্রামের শুকুমার দাস মহন্ত গ্রামের গণ্যমান্য লোকজনদের নিকট প্রথমে শালিস দেয়। ওই শালিসে তাদের দন্দ্বের অবশান না হওয়ায় তা পার হয়ে যায় স্থানীয় মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদে। সে লক্ষ্যে আগামী মঙ্গলবার উভয় পক্ষকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত থাকতে নোটিশ করেন চেয়ারম্যান। নোটিশ পাওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে এবং ওই শালিসে উপস্থিত না হওয়ার কৌশল নিয়ে কালীদাস মহন্ত ও তার ছেলে লিখন চন্দ্র মহন্ত রাতের অন্ধকারে মন্দির থেকে মুর্তিগুলো সড়িয়ে রাখেন বলে অভিযোগ করেছে শুকুমার দাস মহন্ত। উপজেলার কুসুমসাড়া গ্রামে হিন্দুপাড়া কালীদাস মহন্ত বলেন,শুকুমার দাস মহন্ত এবং তার দুই ছেলে সুব্রত দাস মহন্ত ও প্রসনজিৎ দাস মহন্ত মুর্তিগুলো চুরি করেছে। উপজেলার কুসুমসাড়া গ্রামে হিন্দুপাড়া শুকুমার দাস মহন্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের জমিগুলো একাই ভোগদখল করে আসছে কালীদাস। তার বিরুদ্ধে আমি ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছি। আগামী মঙ্গলবার ইউনিয়ন পরিষদে ওই বিষয়ে শালিস আছে। উপস্থিত না হওয়ার জন্য নিজেই মুর্তিগুলো সড়িয়ে রেখে চুরির নাটক সৃষ্টি করেছে সে। কালাই উপজেলা হিন্দু-বদ্ধ্য-খ্রিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধ মুনীষ চৌধুরী বলেন, চুরি নয়, আসলে এটা তাদের নিজেদের স্বার্থের বিষয়। শালিসে উপস্থিত না হওয়ার কৌশল হিসেবে তারা দুজনেই এই পথ বেঁচে নিয়েছে। মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাবিব লজিক তালুকদার বলেন, দেবত্তর সম্পত্তি নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দন্দ্ব লেগেই আছে। আর এই বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার পরিষদে শালিসও আছে। কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ খান বলেন, যতদুর জানা গেছে জমাজমি নিয়ে তাদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি আমরা জোড়ালো ভাবে তদন্ত করছি। খুব দ্রত এর মূল রহস্য বের হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দিন বলেন, যে কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকনে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |