/ বিশেষ / বাংলাদেশ সরকার এবং আইএফএডি’র ৯২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ
বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নে
বাংলাদেশ সরকার এবং আইএফএডি’র ৯২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ
ডেস্ক রিপোর্ট:
|
রোম: ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি) এবং বাংলাদেশ সরকার ছয়বছরব্যাপী বাস্তবায়নযোগ্য এক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ফেব্রুয়ারী ১৩ । এই প্রকল্প বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ছয়টি বন্যাপ্রবণ জেলায় ৩০৩,০০০ পরিবারের জীবিকার মানোন্নয়ন এবং চরম আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের সহনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে ।
তথ্য, অবকাঠামোগত অভিগম্যতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে এই প্রকল্প। চুক্তিতে আইএফএডি’র পক্ষে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হাংবো এবং বাংলাদেশের পক্ষে দেশটির অর্থ মন্ত্রনালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজি শফিকুল আজম। সম্পূর্ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৯২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৬৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আসবে আইএফএডি’র কাছ থেকে ঋণ হিসেবে । সংস্থাটি আরও ১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিবে অনুদান হিসেবে। বাংলাদেশ সরকার সরবরাহ করবে ২৭.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা আশা করি এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে ইফাদ (আইএফএডি)কারণ পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অংশিদারিত্তের যে মডেল ইফাদ অনুসরণ করে তা জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং অন্যান্য সংগঠনের চাইতে আলাদা।” আইএফএডির বাংলাদেশ কান্ট্রি প্রোগ্রাম ম্যানেজার বেনোয়া থিয়েরি বলেন, “নিয়মিত বন্যা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, অপ্রতুল কৃষি উৎপাদন এবং কৃষি ক্ষেত্রের বাইরে জীবিকার অনুপস্থিতি প্রকল্প এলাকায় প্রবল দারিদ্র্যের কারণ ।” বেনোয়া থিয়েরি আরও বলেন, “গ্রামীণ এই জনগোষ্ঠী নানা সঙ্কটের মধ্যে দিনযাপন করে। তাদের কাছে সেবা পৌছে না এবং বাজারেও নেই তাদের অভিগম্যতা । ছেলেরা বাধ্য হয় গ্রাম ছেড়ে শহরের পথে পা বাড়াতে, কাজের খোজে এবং মেয়েরা ঘর এবং ভিটেমাটি আকড়ে পড়ে থাকে। আমরা এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে সরকারের সাথে কাজ করতে চাই।” এই প্রকল্পের অধিনে ২৫ টি বন্যাপ্রবণ উপজেলায় আবহাওয়া সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে, সংস্থান করা হবে কৃষি বহির্ভুত জীবিকার । এছাড়া বৃদ্ধি করা হবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় এই জনগোষ্ঠীর অভিযোজন সক্ষমতা । এই প্রকল্পের অধিনে বাস্তবায়ন করা হবে একটি আগাম সতর্কিকরণ পদ্ধতি যার ব্যাবস্থাপনায় থাকবে স্থানীয় জনগন। সতর্কিকরণ ব্যাবস্থাটি প্রকল্প এলাকার বাইরেও বাস্তবায়ন করা যাবে। ছয়বছরব্যাপি এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে গাইবান্ধা, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নিলফামারি এবং রংপুর জেলায়। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত যমুনা এবং তিস্তা নদীর পানি প্রায়ই প্লাবিত করে এই জেলাগুলোকে। উন্নত অবকাঠামো এবং আগাম সতর্কিকরণ ব্যাবস্থা প্রকল্প এলাকার জনগোষ্ঠীর জীবনের মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আইএফএডি বাংলাদেশে ৩২ টি গ্রামোন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ১৯৭৮ সাল থেকে। এই প্রকল্পগুলোতে আইএফএডি’র বিনিয়োগ ৭৮১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যৌথ বিনিয়োগ হিসেব করলে এই প্রকল্পগুলোতে মোট ব্যায়ের পরিমান দাঁড়াবে ২.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের এক কোটি দশ লক্ষ গ্রামীণ পরিবার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুবিধা ভোগ করেছে। সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি |