/ সারাদেশ / সিলেটের বিশ্বনাথে দু’শিশু সন্তানকে হত্যার পর স্যাভলন পানে মায়ের আত্নহত্যার চেষ্টা
সিলেটের বিশ্বনাথে দু’শিশু সন্তানকে হত্যার পর স্যাভলন পানে মায়ের আত্নহত্যার চেষ্টা
সিলেট প্রতিনিধি:
|
সিলেটের বিশ্বনাথে পারিবারীক কলহের জের ধরে মায়ের হাতে দুই শিশু সন্তান হত্যার পর মা নিজেও স্যাভলন পান করে মঙ্গলবার আত্নহত্যার চেষ্টা করেন। হত্যার শিকার শিশুরা হল, ‘তিন বছর বয়সী নাহিদুল ইসলাম মারুয়ান ও ১৮ মাস বয়সী ওয়াহিদুল ইসলাম রুমান’ । ওই দু’শিশু বিশ্বনাথের লামাকাজি ইউনিয়নের কোনাউড়া-নোয়াগাঁও গ্রামের কবির আলী রনি বেগম ওরফে বিউটি বেগম দম্পতির সন্তান।’
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার লামাকাজির কোনাউড়া-নোয়াগাঁও গ্রামের কবির আলীর স্ত্রী পারিবারীক কলহের জের ধরে নিজ বসত ঘরে দু’শিশু সন্তান নাহিদুল ইসলাম মারুয়ান ও ওয়াহিদুল ইসলাম রুমানকে বাথরুমের বালতির পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাথরুমে দুটি বড় বালতিতে লাশ ফেলে রাখেন। এরপর মা রনি ওরফে বিউটি আক্তার রনি নিজেও বাথরুমে রাখা স্যাভলন পান করে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন। বিকেলে জমিতে কৃষি কাজ থেকে বাড়ি ফিরে খাবার খেতে বসতবাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে দেখতে না পেয়ে অব্যবহৃত পার্শ্ববর্তী ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে বাথরুম থেকে দু’ সন্তানের লাশ উদ্ধার করেন পিতা কবির আলী। নিহতদের মা রনি বেগম ছোট ছেলের লাশের পাশে বসা ছিল। এসময় পৃথক দু বালতির মধ্যে দু’সন্তানের পা উপরের দিকে ও মাথা নিচের দিকে দেখতে পান কবির আলী। নাহিদুলকে ২০ লিটারী বালতির মধ্যে ডুবিয়ে বালতির ঢাকনা দিয়ে তার উপর একটি কলসী ভর্তি পানি রাখা হয়। আর ওয়াহিদুলকে ১৫ লিটারী বালতির মধ্যে ডুবিয়ে বালতির ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। ছেলেদের হত্যা করার পর মা রনি স্যাভলন পান করে আত্মহত্যার চেষ্ঠা করেন। অবশেষে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে থানা পুলিশ আহত অবস্থায় ঘাতক মা রনিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এএমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতদের পিতা কবির আলীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নিহত দু’শিশুর পিতা কবির আলী বলেন, সকাল বেলা দুই ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় রেখে কৃষি কাজের জন্য জমিতে যাই। দুপুর বেলা খেতে আসি। অন্যান্য দিন আমি বাড়িতে আসার সাথে সাথে ছেলেরা আমাকে ঘিরে ধরে। মঙ্গলবার স্ত্রী সহ তাদেরকে দেখতে না পেরে তাদেরকে খুঁজতে থাকি। ছাদের উপরসহ সব রুমে খোঁজাখুঁজির পর অব্যবহৃত ঘরের দিকে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি সেই রুমের দরজা ভিতর থেকে আটকানো রয়েছে। এরপর শাবল দিয়ে ঘরের বেড়া ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পাই দুইটি পৃথক বালতির মধ্যে আমার দু’ ছেলের পা গুলো উপরের দিকে, আর মাথা নিচের দিকে থাকা দু’টি লাশ পড়ে রয়েছে। ছোট ছেলের লাশ থাকা বালতির পাশে আমার স্ত্রী (রনি) বসে আছে।’ স্থানীয় ইউপি মেম্বার চমক আলী বলেন, এলাকাবাসী ধারণা মা তার দুই সন্তানকে বালতিতে পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। আর সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আত্নহত্যা করার চেষ্টা করে।’ বিশ্বনাথ থানার ওসি মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। আহত অবস্থায় মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে মা নিজের দুই শিশু পুত্রকে বসত ঘরের বাথরুমে বালতির মধ্যে পানিতে চুবিয়ে চুবিয়ে হত্যা করেছে। |