/ সারাদেশ / মৌলভীবাজারের বন্যা, অতিবৃষ্ঠিতে ভাঙাচুরা রাস্তায় দুর্ভোগ বাড়ছেই
মৌলভীবাজারের বন্যা, অতিবৃষ্ঠিতে ভাঙাচুরা রাস্তায় দুর্ভোগ বাড়ছেই
পিকলু চক্রবর্ত্তী, ঢাকা:
|
গত বছর দুই ধপা দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও অতিবৃষ্ঠিতে মৌলভীবাজারের অধিকাংশ রাস্তাসমূহ ভেঙেচুরে খানাখন্দের সৃষ্ঠি হয়েছে।দীর্ঘ দিন পানি বন্ধী থাকা হাকালুকি,কাউয়া দীঘি,হাইল হ্ওার সহ নদীর পারের সড়কের অনেক স্থানে বন্যা পরবর্তী সময়ে তৈরী হয় ছোট বড় গর্ত।বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার দুপাশের মাটি ভেঙে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির। বেহাল সড়কে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌছেচে। সড়ক বিভাগের লোকজন বিভিন্ন গর্তে ইট ও বালু ফেলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। এধিকে অনেক রাস্তা দীর্ঘদিন মেরামত কাজ না হওয়ায় দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সরজমেিন দেখাযায়,পানি বন্ধী থাকা জেলার রাজনগর,কুলাউড়া,জুড়ি,বড়লেখা,সদর উপজলোর অধিকাংশ সড়কের পিচ ও খোয়া উঠে অসংখ্য গর্তের সৃষ্ঠি হয়েছে।কোথাও সড়কের নিচ থেকে মাটি বের হয়েছে। চলাচলে দুর্ভোগে পরছেন সাধারণ মানুষ। খানাখন্দে ভরা ঝুকিপূর্ণ এই সড়কে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। সড়ক ও জনপথ (সওজ) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্র জানায়, অতিবৃষ্ঠিতে তাদের ৮১ কিলোমিটার সড়ক এবং বন্যায় ৫ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। হাকালুকি হাওরের পানিতে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় ৫ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগস্ত হয়েছে। অতিবৃষ্ঠি ও পাহাড়ী ঢলে জুড়ি-লাঠিটিলা আঞ্চলিক সড়কের ২৯ কিলোমিটার, মৌলভীবাজার-শমসের নগর সড়কের ১৩ কিলোমিটার, কুলাউড়া-কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার, কুলাউড়া-পৃথিমপাশা রবিরবাজার সড়কের ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৌলভীবাজার-শমসের নগর সড়কের মৌলভীবাজার-মুন্সিবাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার। এই সড়কে বড় বড় গর্ত চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। এলজিডি(স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্র জানায়,দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও অতিবৃষ্ঠিতে জেলার সাত উপজেলায় তাদের ৩৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগস্ত হয়েছে।এর মধ্যে বড়লেখা উপজেলায় ৬৬ ,জুড়ি উপজেলায় ৩২,কুলাউড়া উপজেলায় ৪০,রাজনগর উপজেলায় ৫৬,সদর উপজেলায় ৩৫,কমলগঞ্জ উপজেলায় ৪,শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ২৯ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগস্ত হয়েছে। স্থানীয় বাস চালক মিত্র দেব বলেন, ‘রাস্তায় গাত (গর্ত) আর গাত। সাবধানে গাড়ি চালাইতে হয়। ৪০ মিনিটের পথ যাইতে এক ঘন্টা লাগে।’ অটোরিকশার চালক শামীম মিয়া বলেন, ‘গাতো (গর্তে) পড়িয়া গাড়ির কলকবজা নষ্ট অয়। কয় দিন পর পর কাম করানি লাগে। যা রুজি তার অর্ধেকই কামে খরচ। তবুও পেটের তাগিদে গাড়ি চালাই।’ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ’গর্তের মধ্যে বালু ফেলে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসকল স্থান রিপেয়ার বার্ষিক যে বরাদ্দ মিলে। সে টাকা দিয়ে হবে না। এরজন্য বিশেষ বরাদ্ধ লাগবে। আমরা উপরে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাঠিয়েছি। এরমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প কর্মসূূচির (ডিপিপি) আওতায় জুড়ী-ফুলতলা-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের উন্নয়নে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। কমিশন এটা অনুমোদন করলে একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) যাবে। একনেক থেকে অনুমোদনের পর দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। সড়কটি ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুট চওড়া হবে। অন্যান্য সড়কের জন্য ও আমরা চেষ্ঠা করছি। বরাদ্ধ পেলে কাজ করব।’ এলজিইডি(স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী) মৌলভীবাজার জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম বলেন,দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে এলজিইডির প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সংস্কার ব্যায় প্রায় ১০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।২০ কোটি টাকা বরাদ্দ পায়া গেছে। এই বরাদ্দকৃত টাকার কাজ আশাকরি আগামী জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হবে। যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা দিয়ে সকল সড়ক সংস্কার করা সম্ভব নয়। |