/ সারাদেশ / মামলা পর মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানির অভিযোগ
মামলা পর মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানির অভিযোগ
বারী উদ্দিন আহমেদ বাবর, কুমিল্লা:
|
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের নকু গাজীর ছেলে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীকে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে অন্তত ৩০-৪০ জন গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন। এলাকাবাসী জানায়, ওই গ্রামের রুহুল আমিন একজন দুষ্কৃতিকারী লোক। কোন কারনে গ্রামের কারো সাথে ঝড়গা হলেই মিথ্যা মামলা ঠুকে দিয়ে তাঁকে হয়রানি করতে থাকেন। অভিযোগ ও মিথ্যা মামলার শিকার একই গ্রামের মীর হোসেনের ছেলে কালাম মিয়া বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রুহুল আমিনের সাথে বিরোধ চলে আসছে। এসব ঘটনায় নাঙ্গলকোট থানা, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ ও গ্রামেসহ মোট ৪ বার শালিস বৈঠক হয়। প্রত্যেক শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত তিনি মেনে বাড়ী আসেন। কিন্তু পরে আর ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন না। গত কিছুদিন পূর্বে ঘরের ছালার পানি পড়াকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিনের সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে সে আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন অর্থাৎ যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আমার পাশাপাশি ১২ বছরের ১ শিশুসহ সত্তোরর্ধ বৃদ্ধ ২ গ্রামবাসীকে আসামী করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ মামলার বাদী করা হয় পুত্রবধূ জোসনা বেগমকে। তিনি ওই গ্রামে থাকেন না। গ্রামবাসী জানায়, জোসনা পাশের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সির হাট ইউনিয়নের দলমুড়ি গ্রামে বাপের বাড়ীতে থাকেন। মিথ্যা মামলার শিকার ওই গ্রামের বৃদ্ধ ইউছুফ মিয়া (৭০) বলেন, কোন মারামারি নয় সামন্য ঝড়গার জের ধরে রুহুল আমিন আমার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৩০ মে এসিড নিক্ষেপের একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। যা পরে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছিল। এ ছাড়াও রুহুল আমিন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে কোন কারন ছাড়াই ৩/৪ টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি আরো বলেন, রুহুল আমিন এভাবে একর পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানি করছে। তাঁর সাথে কারো কোন তর্ক হলেই সে বিভিন্ন ঘটনা দেখিয়ে মামলা দিয়ে দেয়। এ সময় ওই গ্রামের বর্তমান মেম্বার ইছহাক মিয়া, সাবেক মেম্বার জহিরুল হক মজুমদার, গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, ফজলুল হক, আবদুল বারেক সর্দার, আবু ইউছুফ, মীর হোসেন, আবুল বশর, নিজাম উদ্দিনসহ গ্রামের ৩০-৪০ জন বাসিন্দা, শালিসদার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জানান, রুহুল আমিন একজন মামলাবাজ ও ভূমি দস্যু। সে কথায় কথায় গ্রামের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আপনাদের লেখনিতে আমরা এর প্রতিকার চাই। এসমস্ত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার বাদী জোসনা বেগম আসামীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ থাকার বিষয়ে স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন। মিথ্যা নয় সঠিক মামলা করেছি। তিনি বলেন, ঘটনার দিন একা পেয়ে আসামীরা আমাকে মারধর করেছিল। তবে যৌন হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান জোসনা। সর্বশেষ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাঙ্গলকোট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কান্তি দে জানান, মামলার তদন্ত কাজ চলছে। তবে উভয়পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এছাড়া যৌন হয়রানির ঘটনা ঠিক না হলেও মারামারির এবং এ্যাবোরশনের বিষয়টি সঠিক। |