![]() পরমাণু শক্তিধর দেশ কয়টি, কার হাতে কত অস্ত্র রয়েছে
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() ফেডারেশন অব অ্যাটোমিক সায়েন্টিস্টসের ‘স্ট্যাটাস অব দ্য ওয়ার্ল্ড’স নিউক্লিয়ার ফোর্সেস–২০২৫’ অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে আনুমানিক ১২ হাজার ৩৩১টি পারমাণবিক অস্ত্রবহনকারী ওয়ারহেড রয়েছে। যদিও স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর অস্ত্রভাণ্ডারে প্রায় ৭০ হাজার ওয়ারহেড ছিল- যা বর্তমান সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানের অস্ত্রগুলো আরও বিধ্বংসী এবং আগামী এক দশকে এই ভাণ্ডার আরও বাড়বে। চলুন এক নজরে দেখে নিই, কোন দেশের হাতে কত পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। রাশিয়ার হাতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে যা আনুমানিক ৫ হাজার ৮৮৯টি। ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে এগুলো ছোঁড়া সম্ভব। ২০২২ সালে রাশিয়া এই বহর রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণে প্রায় ৯৬০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। ১৯৪৯ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন সেমিপালাতিনস্কসহ বিভিন্ন স্থানে ৭১৫টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। রাশিয়া এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) সই বা অনুমোদন করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আনুমানিক ৫ হাজার ২৪৪টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৪০০টি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ভূগর্ভস্থ সাইলোতে রাখা আছে। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র এ খাতে প্রায় ৪ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। ১৯৪৫ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে দেশটি ১,০৩০টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। রাশিয়ার মতো যুক্তরাষ্ট্রও এখনো টিপিএনডব্লিউতে সই করেনি। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীনের কাছে অনেক কম সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। বেইজিংয়ের কাছে আনুমানিক ৪১০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে যা ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে ছোঁড়া সম্ভব। ১৯৬৪ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত চীন ৪৫টি পরীক্ষা চালিয়েছে। ২০২২ সালে প্রায় এক হাজার ১৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। টিপিএনডব্লিউ চুক্তিতে সই বা অনুমোদন চীনেরও নেই। ফ্রান্সের কাছে আনুমানিক ২৯০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। ১৯৬০–১৯৯৬ পর্যন্ত দেশটি আলজেরিয়া ও ফরাসি পলিনেশিয়ায় ২১০টি পরীক্ষা চালিয়েছে।২০২২ সালে ব্যয় করেছে প্রায় ৫৬০ কোটি ডলার। টিপিএনডব্লিউতে সই করেনি দেশটি। যুক্তরাজ্যের হাতে আনুমানিক ২২৫টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা মূলত সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য। ২০২১ সালে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় এবং ২৬০টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।২০২২ সালে ব্যয় করেছে প্রায় ৬৮০ কোটি ডলার। এটিও টিপিএনডব্লিউতে সই করেনি। পাকিস্তানের হাতে আনুমানিক ১৭০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ সম্ভব এবং সাবমেরিন সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে। ১৯৯৮ সালে দুইবার পরীক্ষা চালায়। ২০২২ সালে ব্যয় প্রায় ১০০ কোটি ডলার। টিপিএনডব্লিউতে সই করেনি দেশটি। ভারতের হাতে আনুমানিক ১৬৪টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান ছাড়াও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ সক্ষমতা থাকতে পারে। ১৯৭৪ ও ১৯৯৮ সালে মোট তিনবার পরীক্ষা চালিয়েছে। ২০২২ সালে ব্যয় করেছে প্রায় ২৭০ কোটি ডলার। টিপিএনডব্লিউতে সই করেনি দেশটি। ইসরায়েলের হাতে আনুমানিক ৯০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। দেশটি কখনো নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি। ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও বিমান থেকে উৎক্ষেপণের সক্ষমতা আছে বলে ধারণা করা হয়। সম্ভাব্য পরীক্ষা হয় ১৯৭৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। ২০২২ সালে আনুমানিক ১২০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। টিপিএনডব্লিউতে সই করেনি দেশটি। উত্তর কোরিয়ার হাতে আনুমানিক ৩০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ছোঁড়া সম্ভব।২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছয়টি পরীক্ষা চালিয়েছে— একবিংশ শতকে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো একমাত্র দেশ। ২০২৩ সালে তাদের পারমাণবিক নীতি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।২০২২ সালে ব্যয় প্রায় ৫৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। টিপিএনডব্লিউতে সই নেই দেশটির। অন্যান্য মোতায়েনকৃত পারমাণবিক অস্ত্র: ইতালি, তুরস্ক, বেলজিয়াম, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ১০০টির মতো পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে (ইতালিতে ৩৫টি, তুরস্কে ২০টি, বাকি তিন দেশে ১৫টি করে)। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ অস্ত্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই রয়েছে। ২০২৩ সালে বেলারুশও জানায়, রাশিয়া সেখানে স্বল্প ক্ষমতার ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় রোধে জনমত গড়ে তোলার জন্য এবং বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী চুক্তির পক্ষে ভূমিকা রাখায় আইসিএএন ২০১৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায়। |