![]() ট্রাইব্যুনাল-২ চেয়ারম্যান
বোমা মারলেও ভয় পাব না: বিচারপতি নজরুল
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() তিনি বলেছেন, কেউ বোমা মারলেও তিনি ভয় পাবেন না। মঙ্গলবার সকালে পুরাতন হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারপতিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে ৮ মে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-২-এর কার্যক্রম শুরু হয়। এদিকে, জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে পথ চলি। তার ওপর নির্ভর করে কাজ করি। কেউ বোমা মারলেও ভয় পাব না। কেউ গুলি করে মেরে ফেললে আমার সব গুনাহ নিয়ে যাবে। ফলে আমার ভয়ের কারণ নেই। আমি কবরের পাশে দাঁড়ানো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ভয়ের কিছু নেই। আমরা এই তরি বয়ে নিয়ে যাব তীরে।' বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, কিছু লোক গত ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। তারা নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। মানুষ নিজেদের কথা বলতে পারেনি। সেই ফ্যাসিস্টরা এখনো ফিরে আসার চষ্টো করছে। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনো যথাযথ চিকিৎসা পাননি। বিচারকরা চেষ্টা করছেন ছাত্র-জনতার দুর্ভোগ কমাতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইবু্যনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাদের নাম উলে্লখ করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে তারা কাজ করবেন। তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে চলবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিষয়গুলোও মেনে চলবেন বলেও উলে্লখ করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই আমাদের এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে। আমরা দেখতে চাই এই বিচার যেন হয় আন্তর্জাতিকমানের। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে সংবর্ধনায় এজলাসে বসা শুরুর মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাত্রা শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে বলে আশা করছি। আর কিছু নতুন মামলা এখানে দাখিল করব। ইনশাআল্লাহ, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবেন। শেখ হাসিনাকে আত্মসমর্পণে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ : জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (১৭ জুন) এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন ট্রাইবু্যনালের রেজিস্ট্রার। মঙ্গলবার একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, পিতা. মৃত শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতা. মৃত ফজিলাতুন্নেসা, স্বামী. ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া, টুঙ্গিপাড়া, থানা. টুঙ্গিপাড়া, জেলা. গোপালগঞ্জ, বর্তমান ঠিকানা∏ সুধা-সদন, বাড়ি নং-৫৪, রোড নং-৫, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা-১২০৯ এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পিতা. আশরাফ আলি খান, মাতা আকরামুন নেছা, গ্রাম-খারিয়া, থানা দোহার, জেলা. ঢাকা, বর্তমান ঠিকানা∏হোল্ডিং নং ১৩৬/১, গেট নং-০৬, মনিপুরি পাড়া, থানা. তেজগাঁও, ডিএমপি, ঢাকা-গণের বিরুদ্ধে ট্রাইবু্যনালের চিফ প্রসিকিউটর কর্তৃক International Crimes (Tribunals) Act, ১৯৭৩ এর ৯(১) ধারায় দাখিলকৃত Èফরমাল চার্জ বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী অপরাধসমূহ আমলে গ্রহণ করেছেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সত্ত্বেও তারা পলাতক রয়েছেন বা গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করেছেন। সেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল-১) কার্যপ্রণালী বিধিমালা, ২০১০ (সংশোধিত-২০২৫) এর ৩১ বিধি অনুসারে তাদের আগামী ২৪ জুন ট্রাইবু্যনালে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া গেল। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হবে। |