![]() শ্রমিক সুরক্ষায় আইন আছে, কিন্তু কতটা কার্যকর?
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() বিশেষ করে পোশাকশিল্প, নির্মাণ খাত এবং পরিবহন খাতে কাজ করা শ্রমিকরা প্রায়শই কর্মস্থলে ঝুঁকি, নিরাপত্তাহীনতা এবং সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার মতো সমস্যার মুখোমুখি হন। অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয় না, এমনকি স্বাস্থ্য, বিমা বা ভবিষ্যৎ তহবিলের মতো মৌলিক সুবিধাও থাকে না তাদের ক্ষেত্রে। কালের বিবর্তনে কৃতদাস প্রথা বিলুপ্ত হলেও শ্রমিক শ্রেণির প্রতি নানান বৈষম্য আগেও ছিল, এখনো রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে শ্রমজীবীর জন্য আইন তৈরি হলেও আধুনিক যুগেও শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। দেশে শ্রম আইন থাকলেও বাস্তবে প্রয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ। পরিদর্শক সংকট, দুর্বল তদারকি এবং মালিকপক্ষের গাফিলতিতে প্রতিদিন ঝুঁকির মুখে শ্রমজীবী মানুষ। আন্তর্জাতিক বাজারেও চাপ বাড়ছে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার। দেশে শ্রমিকরা আইনি অধিকার ও সুরক্ষা থেকে কীভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন সে বিষয়ে আইনজীবীরা তাদের মতামত তুলে ধরছেন। শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কাজের সময় দুর্ঘটনায় আক্রান্ত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শিল্প বিরোধ উত্থাপন ও নিষ্পত্তি, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কল্যাণ, চাকরির অবস্থা ও পরিবেশসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় মাথায় নিয়ে শ্রম আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনে শ্রমিকদের নানান ধরনের অধিকারের কথা থাকলেও তারা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিশুদের কম মজুরি, নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি না দিয়ে ছাঁটাই, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ না দেওয়া এবং বর্তমানে আউট সোর্সিংসহ নানান কারণে শ্রমিকরা তাদের আইনি সুরক্ষা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত বলে মনে করেন শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিশ্লেষক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তাদের কেউ কেউ বলছেন, বর্তমানে শ্রমিকদের অনেকেই মালিকের সঙ্গে তৃতীয়পক্ষের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ তথা আউটসোর্সিংয়ের কারণে শ্রম অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে বলে মনে করেন আইনজীবীরা। তারা বলছেন, শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে কাগুজে আইন নয়, দরকার তার কার্যকর প্রয়োগ। শ্রম পরিদর্শক বাড়ানো, কারখানা তদারকিতে কঠোরতা এবং মালিকদের জবাবদিহির আওতায় আনলেই কেবল এ চিত্র বদলানো সম্ভব। শিল্পকারখানায় নিরাপত্তাহীনতায় শ্রমিকরা বাংলাদেশ শ্রম পরিদর্শন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত প্রায় ৪৮ হাজার কারখানার জন্য পরিদর্শক আছেন মাত্র কয়েকশ। পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে শ্রমিকদের সুরক্ষা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের এক জরিপে জানা গেছে, ৭১ শতাংশ শ্রমিক তাদের কর্মস্থলে নিরাপদ পরিবেশ পাচ্ছেন না। পোশাকশ্রমিক রায়হান মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন কোম্পানির বেঁধে দেওয়া সময়ে কাজ করি। মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত সময়ও কাজ করতে হয়। কিন্তু ওভারটাইমের টাকা ঠিকমতো দেয় না। নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বললেই চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখায়।’ আইনি সুরক্ষা ও অধিকারের কথা আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে আইন আছে, কিন্তু এর প্রয়োগের ঘাটতি রয়েছে। যদি আইন কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যেত, তাহলে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো।’ জাফরুল হাসান শরীফ বলেন, ‘বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের প্রবণতা বাড়ার কারণে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য কমিশন, গ্র্যাচুইটি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড কোনো কিছুই ঠিকমতো পাচ্ছেন না। আমরা যেটির নাম দিয়েছি মডার্ন লেবারি। এর কারণে মে দিবসের অধিকার চর্চার কথাও ঠিকঠাক বলা যাচ্ছে না। মালিক স্থায়ী কাজে অস্থায়ী লোক নিয়োগ দিচ্ছে। যে কারণে সব জায়গায় লোক নিচ্ছে কিন্তু এক শ্রেণির সুবিধাভোগী মালিকের সঙ্গে দেখা করে তাদেরটা কামিয়ে নিচ্ছেন। বাস্তবতা হলো তদারকির কথা বলে ওনারা নিচ্ছেন কিন্তু সঠিক তদারকি হচ্ছে না।’ শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, শ্রমিকদের সুরক্ষা শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, এটি একটি টেকসই অর্থনীতির পূর্বশর্ত। শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হলে কেবল আইন প্রণয়ন নয়, তার যথাযথ বাস্তবায়ন ও নজরদারি নিশ্চিত করাটাই সবচেয়ে জরুরি। কিন্তু শ্রম মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা-সমন্বয় জোরদারে সরকারি (শ্রম অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, শ্রম শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন আইআরআই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র জবাবদিহিতা থাকার কথা বলা হলেও সেটি নেই। ‘সব শ্রমিকের সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার প্রাপ্তির (কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, মৃত্যু, কর্মক্ষমতা, অসুস্থতা-অবসর, মাতৃত্বকালীন সুবিধা বা যে কোনো প্রতিকূল অবস্থা) নারী-পুরুষ, অন্যান্য লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীভেদে মজুরি, ট্রেড ইউনিয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াসহ শ্রম খাতের সর্বত্র বৈষম্য নয় সম-অধিকার নিশ্চিতে কার্যক্রম গ্রহণ করবে রাষ্ট্র। কিন্তু কোনো কিছুতেই কর্তৃপক্ষের অস্তিত্ব নেই।’ বলেন অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ। সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির (এসআরএস) কো-অর্ডিনেটর (লিগ্যাল) ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের সুরক্ষায় ২০০৬ সালে শ্রম আইন হয়। কিন্তু প্রণয়নের পরই আইনের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা প্রকট হয়ে দেখা দেয়। শতকরা ৮০ শতাংশ শ্রমজীবী মানুষই শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে থাকে। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবিতে সরকার শ্রম আইন সংশোধনে বাধ্য হয়। বিশেষ করে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর ২০১৩ সালে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে একটি বড় সংশোধন আসে শ্রম আইনে।’ ‘পরে ২০১৮ সালেও শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার নিয়ে কিছু সংশোধন আসে। কিন্তু এই দুইটি সংশোধনের পরও এখনো ধরা হয় শ্রম আইন প্রায় ৬৭ শতাংশ শ্রমজীবীকে সুরক্ষা দিতে পারে না। শ্রম আইনে যতগুলো সুরক্ষা দেওয়া আছে তা বেশির ভাগ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য। কিন্তু অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে দেশে প্রায় ৮৫ শতাংশের জন্য শ্রম আইনের বেশিরভাগ সুবিধা প্রয়োগ হয় না। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুবিধা, সার্ভিস বেনিফিট, ভবিষ্যৎ তহবিল ও কোম্পানির মুনাফায় শ্রমিকের অংশগ্রণের সুবিধাগুলো কোনো অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না।’ অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য যতটুকু সুবিধা ছিল তাও বর্তমানে মালিকরা এই আইনের কয়েকটি সুবিধা নিয়ে অপপ্রয়োগ করতে পারছে। যেমন বড় বড় কোম্পানি তাদের প্রতিষ্ঠানে এখন আর সরাসরি নিয়োগ দেয় না। বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেখানে নিয়োগ দেয়। ফলে একজন শ্রমিককে তার সুবিধা কে দেবে? কোম্পানি নাকি ঠিকাদার? তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন শ্রমিকরা। ফলে শ্রমিকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সুরক্ষা পাচ্ছেন না। শ্রম আইন সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো মানছে কি না তা দেখার দায়িত্ব সরকারি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের। কিন্তু তারাও শ্রমিক সুরক্ষায় মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তাই শ্রম আইনের সুরক্ষা দিতে হলে শ্রমিকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংশোধন ও স্থায়ী কাজে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ বন্ধ করে, কাজে নিয়োগের আগেই শ্রমিকদের নিয়োগ ও পরিচয়পত্র দিতে হবে। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের সুরক্ষায় শ্রম আইন সংশোধন করে তাদের কীভাবে সামাজিক সুরক্ষায় রাখা যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানিয়েছেন এসআরএসের কো-অর্ডিনেটর (লিগ্যাল) ফারুক হোসেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য কোম্পানির মালিকের লাভের একটি অংশ বিতরণ করতে হবে। সেটা ১৯৭৪ সাল থেকে ছিল। এখন পর্যন্ত অনেক কোম্পানি এটা বাস্তবায়ন করেনি। লোকাল বেশ কিছু কোম্পানি লভ্যাংশ শ্রমিকদের দিলেও বা বাধ্য করা হলেও এখনো আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিদেশি কোম্পানিগুলো দিচ্ছে না। তাদের জন্য কোনো রুলসই নেই। তার মানে বুঝুন বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ দিচ্ছে, আর বিদেশি কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কোটি বা শত কোটি টাকা কামাই করে শ্রমিকদের লভ্যাংশ না দিয়ে চলে যাচ্ছে। লোকাল কোম্পানিতে শ্রমিকের নিয়োগের ৯ মাস পর লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা অনেক কোম্পানি দিচ্ছে না। গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, শ্রমিক ও তার পরিবারের উপযোগী মজুরির অধিকার নিশ্চিতে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা, শ্রমিকের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, স্বাস্থ্যসেবা আইনি অধিকার। দুর্ঘটনায় বা অবহেলাজনিত কারণে নিহত-আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। দেখা গেছে দুর্ঘটনা ঘটলে বা মারা গেলে কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা দিতে হবে, সেটাই দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। আবার অন্তঃসত্ত্বা নারী শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ছাড়াই ছাঁটাই করছে। এমনকি কোনো কোনো পোশাক কারখানায় নারী শ্রমিক অন্তঃসত্ত্বা টের পেলে চাকরি থেকে বাদ দিচ্ছে। এসব দায়িত্ব কার, আইনে বলা থাকলেও দেখার কেউ নেই। আইনের প্রয়োগে দুর্বলতার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশের শ্রম পরিদর্শন ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ। বাইরের অনেক জেলা ও বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রম পরিদর্শকের সংখ্যা অপ্রতুল এবং যারা আছেন, তাদের অনেক সময় সরেজমিনে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ বা সক্ষমতাও নেই। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগও রয়েছে। ‘শ্রম আইন বাস্তবায়ন ছাড়া শুধু বিদেশি বিনিয়োগ ধরে রাখা যাবে না। শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত না হলে আমাদের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি বড় বিপদের মুখে পড়বে।’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গোবিন্দ বিশ্বাস। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, দেশের শিল্পখাত বিকাশে শ্রমিকের অধিকারের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যার জন্য শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা দেওয়াল তৈরি হয়নি। ২০০৬ সালের শ্রম আইনে শ্রমিকদের বিভিন্ন আইনগত অধিকার স্বীকৃত আছে। তবে আইনগত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে মালিকপক্ষ স্থায়ী শ্রমিকের পরিবর্তে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে। বিপুল সংখ্যক বেকারত্বের সুযোগে নারী, শিশু ও অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। শ্রমিকদের আইনি প্রতিকারের জন্য শ্রম আদালত গঠন করা হলেও হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার ভয়ে বেশিরভাগই আইনের আশ্রয় নেন না। করপোরেট শ্রমিকদের ক্ষেত্রে অনেকেই আইনি পথে হাঁটলেও শিল্প শ্রমিকরা খুব কমই আইনের আশ্রয় নেন। উপরন্তু কোনো শ্রমিক এক কারখানা থেকে অন্য কারখানায় চলে গেলে মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। খাদেমুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাসহ (আইএলও) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ক্রেতা গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষণে পোশাকশিল্পে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। তদুপরি শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়ন গঠনসহ যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করলে হয়রানিমূলক মামলাসহ চাকরি হারানোর ভয় সৃষ্টি হয়। তাই শ্রমিকদের আইনি প্রতিকার পেতে শিল্পাঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিয়ে শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় কারখানা স্থাপনের ছাড়পত্র, পরিদর্শন, লাইসেন্স নবায়ন ও বিভিন্ন ঋণ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে মালিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। |