/ সারাদেশ / কয়রায় গুড়ি, গুড়ি বৃষ্টি ও হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত
কয়রায় গুড়ি, গুড়ি বৃষ্টি ও হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত
মোঃ রউফ, কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ
|
শীত মৌসুমে হঠাৎ করে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারনে আর হিমেল হাওয়ায় হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে উপকুলীয় জনপদ সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার মানুষ। তার সাথে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে হিম বয়ে আনা বাতাসে হাড় কাঁপুনি শীত।শীতের হিমেল হাওয়ায় শীতের পোশাক পরেও ঠক ঠক করে কাঁপছে মানুষ। গত কয়েক দিন সকালে আগুন জ্বেলে সাজাল জালিয়ে হাত-পা সেঁকেছে মানুষ। তবে গতকাল বৃষ্টি হওয়ায় আগুন দিয়ে সাজাল জালাতে পারেনি মানুষ। প্রচন্ড শীতে সীমাহিন কষ্টে দিন কাটছে এ জনপদের মানুষের। রাত একটু গড়াতেই রাস্তা-ঘাট হয়ে পড়ে সুনসান। গত বৃহস্পতিবারের কয়রার চিত্র এমনই। খুলনা জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। খুলনায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্র রয়েছে। বৃষ্টির কারনে এটি আরও ২/৩ ডিগ্রি কমতে পারে। তাপমাত্রার পারদ দিনদিন যত নামছে, ঠান্ডায় জবুথবু কয়রা ততই বাড়ছে শীতের পোশাকের বিক্রি। উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের বাসিন্দা নুরী শেখ বলেন, দু’দিন থেকে জেঁকে বসেছে শীত। বৈরী আবহাওয়ায় সকাল থেকে গরম কাপড় গায়ে দিয়ে, কানটুপি ও গলায় মাফলার পেঁচিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে। শীতের তীব্রতা এত বেশি ঘর থেকে বের হওয়া দায়। শহর ছাড়া গ্রামে শীতের কামড় বেশি বলে জানান কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, গত দু’দিন থেকে প্রচন্ড শীত পড়ছে। আর এর সাথে যোগ হয়েছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। কয়রার গুচ্ছগ্রামে ও বেড়ীবাঁধের ওপর বসবাসকারী গরিব অসহায় মানুষগুলো খুব কষ্টে আছে। এদিকে কনকনে শীত ও কুয়াশার কারণে বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। হতদরিদ্র নিম্নআয়ের দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষজনের আয়-রোজগারের ক্ষেত্রেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। হঠাৎ করেই আবহাওয়ার এ পরিবর্তনে ছিন্নমূল মানুষকে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। হাঁড় কাঁপানো শীতে থেমে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম ও চলাফেরায় মারাত্মক বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজে যেতে পারছে না। বিশেষ করে সুন্দরবনের জেলেরা প্রচন্ড শীতে মাছ ধরতে কষ্ট পাচ্ছে। এতে দরিদ্র অসহায় ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। ছেলেমেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশেষ করে। বেড়িবাঁধের ওপরে বসবাসকারী হতদরিদ্র ছিন্নমূলের মানুষদের। প্রচন্ড শীত পড়লেও বিগত বছরগুলোর কয়রায় সরকারি-বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে তেমন শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি।তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে শীত বস্ত্র (কম্বল) বিতরন করা হয়েছে। কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রেজাউল করিম বলেন, তীব্র শীতের কাবু হচ্ছে শিশুরা। ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। ঠান্ডাজনিত কারনে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। মানুষ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামাল হোসেন বলেন, শীত নিারনের জন্য গরীব অসহায় মানুষের মাঝে কম্বল বিতরন অব্যাহত রয়েছে।
|