/ সারাদেশ / উন্নত জাতের কুল চাষে ঝুঁকছেন ধামরাইয়ের কৃষকরা
উন্নত জাতের কুল চাষে ঝুঁকছেন ধামরাইয়ের কৃষকরা
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
ঢাকার ধামরাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া উচ্চফলনশীল জাতের কুলে (বরই) লাভের আশা করছেন চাষিরা। কুলবাগানগুলো পাকা-কাঁচা কুলে থোকায় থোকায় ভরে গেছে। উপজেলায় শুরুটা করেন চার-পাঁচজন চাষি। তাঁরা সাহস দেখালেও প্রথমে চাষ করেন সামান্য জমিতে। ফলন ওঠার পর সবার মুখে হাসি। ফলন-দাম দুটোই ভালো। এবার আর বসে থাকা নয়, এগিয়ে এলেন অন্য চাষিরাও। বাণিজ্যিকভাবে ধামরাইতে কুল চাষ বাড়ার গল্পটা এ রকম। লাভজনক হওয়ায় কুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এখানকার অনেক শিক্ষিত-বেকার যুবকেরা। সম্প্রতি উপজেলার আমতা গ্রামের গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, একটি বাগানে সারি সারি কুলগাছ। আকারে ছোট বড়জোর চার থেকে পাঁচ ফুট তবে কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছগুলো। বাঁশ দিয়ে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। বাগান থেকে কুল তুলছিলেন চাষি মো. মনিরুজ্জামান। তাঁর সঙ্গে কাজ করছিলেন আরও কয়েকজন শ্রমিক। সবাই ব্যস্ত। অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য এই চাষি কুল চাষ করে অবসরের পরেও চালু রেখেছেন আয়ের চাকা। মনিরুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে সাত বিঘা জমিতে উন্নতজাতের কাশ্মীরি জাতের বল সুন্দরী আপেল কুল চাষ করেছেন তিনি। এই কুল গাছে প্রথম বছরেই ফলন আসে আর তাতে বিঘাপ্রতি প্রায় ১০০ থেকে ১২০ মণ হারে ফলন পাবার আশা রাখেন তিনি। এ কুল বাগান রোপণ ও পরিচর্যায় তার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তবে এখান থেকে তিনি খরচ বাদে প্রায় ৪ লাখ টাকার মুনাফা আশা করছেন। পূর্ব বাসনা গ্রামের আরেক কুলচাষি আলী হোসেন বলেন, আমি ৩ বছর যাবত কুল চাষ করি। আপেল কুল, কাশ্মীরি ও নারকেলী কুল এই ৩ জাতের কুল জমিতে আবাদ করছি। এসব উন্নত জাতের কুল গাছের চারা রোপণ করার ৭ থেকে ৮ মাসের মাথায় গাছে ফুল আসতে শুরু হয় আর রোগ বালাই কম হওয়ায় প্রতিটি গাছে ফলন বেশ ভালো। প্রথম বছর উৎপাদন খরচ লাগলেও পরের বছর থেকে একটু পরিচর্যা আর সামান্য জৈব সারের ব্যবহার করলেই হয়। বিঘাপ্রতি ৩০ হাজার টাকা খরচে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ফল পাওয়া যায়। ধামরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, ‘ধামরাইতে প্রতিবছর কুলচাষি বাড়ছে। কুল চাষে সবজির চেয়ে বেশি লাভ হয়। তা ছাড়া কুল চাষ পতিত জমিতেও হয়। এ জন্য কৃষকেরা বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষে ঝুঁকছেন। আর কুল চাষে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় চাষাবাদ খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। এবছর উপজেলার প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও বেশ ভালো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে আমরা উপজেলার কুল চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’ |