/ আন্তর্জাতিক / জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র সামনে আসছে
জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র সামনে আসছে
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপেছে সূর্যোদয়ের দেশ খ্যাত জাপান। মাত্র ৯০ মিনিটে অন্তত ২১টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশটিতে। এর সবগুলোই ৪ মাত্রার বেশি। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৬। এই ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এর পুরো চিত্র সামনে না এলেও আস্তে আস্তে তা দৃশ্যমান হওয়া শুরু করেছে। ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি ধসে পড়ার পাশাপাশি রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে। জাপানের ইশিকাওয়া অঞ্চলের ওয়াজিমা শহরের ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা ভূমিকম্পে অন্তত ৩০টি ভবন ধসে পড়ার খবর পেয়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশেপাশে বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাপান রেলওয়ে জানিয়েছে, টোকিও এবং ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের নোটোর কেন্দ্রস্থলের মধ্যে বুলেট ট্রেন পরিষেবাও স্থগিত রয়েছে। মধ্য জাপানে একাধিক বড় ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশেপাশে প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন ছিল। ইউটিলিটি কোম্পানিগুলো বলছে, জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুর পাশে জাপান সাগরের তৈয়ামা, ইশিকাওয়া এবং নিগাতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের পর উপকূলীয় ইশিকাওয়া অঞ্চলে ‘বড় ধরনের সুনামি সতর্কতা’ জারি করা হয়েছিল। পরে সতর্কতা কমিয়ে শুধু ‘সুনামি সতর্কতা’ রাখা হয়েছে। সোমবার (১ জানুয়ারি) ইশিকাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চলের ওয়াজিমা শহরে ১ দশমিক ২ মিটার উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানে। জাপানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে সিএনএন। সুনামি আঘাত হানলেও এখনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া দেশটির তোয়ামা শহর, কাশিওয়াজাকি, কানাজাওয়া বন্দর, টোবিশিমা দ্বীপ, সাদো দ্বীপসহ জাপানের পশ্চিম উপকূলীয় কয়েকটি এলাকায় এক মিটারের কম উচ্চতার সুনামির খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ভবনধসে মানুষ চাপা পড়ার অন্তত ছয়টি ঘটনা জানা গেছে। এছাড়া ভূমিকম্পের পর ইশিকাওয়া অঞ্চলে বড় ধরনের একটি অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী টোকিওর সঙ্গে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ইশিকাওয়া অঞ্চলে গাড়ি চলাচল বন্ধ এবং বুলেট ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি বলে দেশটির পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এদিকে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, আগামী সপ্তাহে বিশেষ করে আগামী দুই বা তিন দিনের মধ্যে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের তীব্রতার আরও বড় ভূমিকম্প এই এলাকায় আঘাত হানতে পারে। আল জাজিরা জানায়, সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দাবানল ও ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়েছে। পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয় জাপানে। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই দেশটিতে বেশি ভূমিকম্প হয়। দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে দুই হাজারের মতো ভূমিকম্প হয়ে থাকে। ভূমিকম্পগুলোর বেশিরভাগই ক্ষীণ হয়ে থাকে। তবে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পকের রেকর্ডও অনেক রয়েছে। |