/ সারাদেশ / শুধু স্বামীর নামে মিল, বিনা অপরাধে ৪ দিন কারাগারে নারী
শুধু স্বামীর নামে মিল, বিনা অপরাধে ৪ দিন কারাগারে নারী
নতুন বার্তা, সাতক্ষীরা:
|
সাতক্ষীরায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির পরিবর্তে রুহী আকতার স্মৃতি নামে এক নারীকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছেন তালা থানার এসআই মামুন। শুধুমাত্র স্বামীর নামের মিলের কারণে তাকে কারাগারে যেতে হয়। এ ঘটনায় চার দিন কারাভোগ শেষে বুধবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২৩ ডিসেম্বর বিকালে রুহী আকতার স্মৃতিকে তার বাসা থেকে আটক করেন এসআই মামুন। এদিকে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। রুহী আকতার স্মৃতির স্বামীর নাম আরিফুল ইসলাম মালী, বাবা শহর আলী ও মায়ের নাম হালিমা বেগম। অন্যদিকে প্রকৃত আসামি সুমি আক্তারের স্বামীর নাম আরিফুল ইসলাম বিশ্বাস, মায়ের নাম সালমা বেগম। জানা যায়, তালা উপজেলার বারুইআটি গ্রামের শহর আলীর মেয়ে রুহী আকতার স্মৃতিকে একটি চেক প্রতারণার মামলায় ২৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় দিকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর রুহী আকতার স্মৃতিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বুধবার কারাগারে থাকা রুহী আকতার স্মৃতির স্বজনরা সাতক্ষীরা আদালত থেকে তাকে জামিনে মুক্ত করে মামলার নথিপত্রে দেখেন, যে মামলায় রুহী আকতার স্মৃতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই মামলার প্রকৃত আসামি তালা উপজেলার আরিফুল ইসলামের স্ত্রী সুমি আক্তার। সুমি আক্তারের বাড়ি বারুইহাটি গ্রামের বিশ্বাসপাড়ায়। এ ঘটনায় তালা থানার এসআই মামুন বলেন, গ্রেফতার করার সময় বা থানায় এসে তাদের পরিবারের কেউ বলেনি আমি সেই আসামি নই। তালা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও এসেছিলেন তিনিও বলেননি। এখন শুনছি গ্রেফতার করা আসামি প্রকৃত আসামি নয়। গ্রেফতার হওয়া নারীর শ্বশুর আব্দুল কাদের মালী জানান, আমরা বারবার বলেছি পুলিশকে সে কোনো এনজিও থেকে লোন নেয়নি। সে কোনো অপরাধী নয়। তবুও বৌমাকে ভাত খাওয়া অবস্থায় ধরে নিয়ে যায়। চার দিন সে বিনা অপরাধে জেল খেটেছে। মামলার বাদী বেসরকারি এনজিওর তালা শাখার ম্যানেজার সৈয়দ ইমরান আলী বলেন, আমি মাত্র এক মাস আগে এ শাখায় যোগদান করেছি। কাগজপত্র না দেখে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না। এ ঘটনায় তালা থানার ওসি মোমিনুল ইসলাম জানান, দুইটা চেক প্রতারণার মামলায় তাকে আটক করা হয়। চেয়ারম্যান জাকিরও থানায় এসেছিলেন। তখন তিনিও তো বলেননি। তাছাড়া তাদের পরিবারের কেউ বিষয়টি জানাননি। ঘটনাটি আমরা জানার পর বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি আব্দুল লতিফ বলেন, এমন ভুল কিভাবে হয়েছে জানি না। যে নামে ওয়ারেন্ট থাকবে পুলিশ সেই নামের ব্যক্তিকে গ্রেফতার করবে। এর বাইরে কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানামাত্র তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনেক সময় নামের মিল থাকে সেক্ষেত্রে হতে পারে তবে বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা হবে। যদি পুলিশের কেউ কিংবা অন্য কেউ হয়রানিমূলকভাবে এটি করে থাকে, সেটি যদি প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। |