/ শিক্ষা / বাকৃবিতে জি.টি.আইয়ের পরিচালকের সীমাহীন দুর্নীতি
বাকৃবিতে জি.টি.আইয়ের পরিচালকের সীমাহীন দুর্নীতি
মো.আউয়াল মিয়া, বাকৃবি:
|
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনিস্টটিউটের (জিটিআই) পরিচালক প্রফেসর এ.কে.এম. রফিকুল ইসলাম বিরুদ্ধে ট্রেনিংয়ের অর্থ আতœসাৎ, অবৈধভাবে গাছ কর্তন করে নিজের ফার্নিচার, চাকুৃরির প্রভোলন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, চাকুরীতে স্বজনপ্রীতি, সহকর্মী ও কর্মচারীদের সাথে দুর্বব্যবহার, ট্রেনিংয়ের গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করাসহ নানা ধরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে জানা যায়, এ.কে.এম. রফিকুল ইসলাম ছাত্রাবস্থায় ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষকের সহায়তায় পরিচালক হয়েছেন। এখন ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষকের সহায়তায় নানা ধরনের অপকর্ম করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন। ট্রেনিয়ের ক্লাস নেয়ার বিষয়ের নানা ধরনের অনিয়ম পাওয়া গেছে। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে দিয়ে একাধিক ক্লাস নেওয়া হয়। তিনি নিজেও অতিরিক্ত ক্লাস নেন। ট্রেনিংয়ের ব্যয়ের কারচুপি করে অর্থ হাতিয়ে নেন। জি.টি.আইয়ের ডরমেনটরীতে গাছ কর্তন করে নিজের বাসায় ফার্নিচার তৈরি করেছেন বলে জানা গেছে। চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে অর্থ নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি পরিচালক পদের প্রভাব খাটিয়ে এক আতœীয়কে মাস্টাররোলে চাকুরী প্রদান করেন। ব্যক্তিগত ও ট্রেনিংয়ের যে কোন কাজ নিজের পছন্দমত না হলেই সহকর্মী ও কর্মচারীদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন। অনেকসময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ট্রেনিংয়ের গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করায় অনেকসময় ট্রেনিংয়ের সাময়িক অসুবিধা হয় বলে জানান ভুক্তভোগী প্রশিক্ষনার্থীরা। নাম প্রকাশের একাধিক কর্মচারী জানান, অফিস সময়ের বাইরে আমাদের কাজ করতে হয়। তার স্বেচ্ছাচারীর কারণে আমরা অতিষ্ঠ। অকারণে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। শফিকুল জানালেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে জিটিআইয়ের পরিচালক তাঁর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু চাকরি না দিয়ে সেই পদে বসিয়েছেন নিজের আত্মীয়কে। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করছেন। নানা ভাবে হুমকি দেওয়ার চেষ্টাও করছেন। পরিচালকের কাছে ওই টাকা দেওয়ার সাক্ষী তার কাছে আছে বলে জানান তিনি। এ অভিযোগের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, শফিকুল একটি চাকরির জন্য আমার অফিসে ধরনা দিত। চাকরির না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি কোনো টাকা-পয়সা নিইনি। শফিক আমাকে বলেছে যে সে চাকরির জন্য ছাত্রলীগকে টাকা দিয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেল বলেন, প্রশাসনিক কোনো কাজে ছাত্রলীগ যুক্ত নয়। চাকরি বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জিটিআইয়ের পরিচালকেরই দেখার কথা। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, আগের পরিচালকদের সময়ও এমনটি ছিল। সহকর্মীদের সিদ্ধান্ত নিয়েই ওসব করা হয়েছে। অবসরে যাওয়া শিক্ষক তাজুল ইসলাম জিটিআইয়ে দুইবার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণে কোর্স ডাইরেক্টর রাখা কিংবা অবসরপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষককে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দেওয়ার কোনো নিয়ম জিটিআইয়ে নেই। আমার সময়ে ওরকম কিছুই ছিল না। কর্মচারীদের অভিযোগ, এই পরিচালক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মোট ৬২ টি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। চাকরির সময়সূচির বাইরে এমনকি ছুটির দিনেও কাজ করতে হয় আমাদের। অতিরিক্ত কাজ করায় আগের পরিচালকেরা একটা সম্মানী দিতেন। এখন অনেক সময় দেন না, দিলেও সেটাকে সম্মানী বলা যায় না। এ ছাড়া সম্প্রতি জিটিআইয়ের ডরমিটরিতে ৪০টি নিন্মমানের খাট ক্রয় ও ব্যক্তিগত কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পরিচালক বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্য নয়। কেউ হয়ত ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। পরিচালকের স্বেচ্ছাচারীতা, টাকা আত্মসাতের ও অনিয়মের বিষয়ে উপাচার্য মো. আলী আকবর বলেন, জনবল নিয়োগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের জন্য। নিয়োগ প্রক্রিয়াকে পুঁজি করে কারো কোনো অনিয়ন বা অর্থ লেনদেনের কোনো করার সুযোগ নেই। যদি এ ধরণের কোনো কিছু হয়ে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। |