/ সারাদেশ / বোয়ালখালীতে দলিল জালিয়াতির অভিযোগ জেলা আওয়ামীলীগ নেতাসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা
বোয়ালখালীতে দলিল জালিয়াতির অভিযোগ জেলা আওয়ামীলীগ নেতাসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা
এম এস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) থেকে:
|
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ভূয়া দাতা ও ক্রেতা সেজে অবৈধ ভাবে জাল দলিল সৃজন ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জায়গার মূল মালিক বাদী হয়ে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতাসহ জালিয়াতচক্রে জড়িত ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এতে আরো ১ জনকে ১নং মোকাবেলা বিবাদী ও ২ জনকে দ্বিতীয়পক্ষ মোকাবেলা বিবাদী করা হয়েছে। এ বিষয়ে বোয়ালখালী সাব-রেজিস্ট্রারকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দেন আদালত।
জানা যায়, উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, ভূমি অফিসকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ শক্তিশালী জালিয়াতচক্র গড়ে উঠে। সংশ্লিষ্ট অফিসের কিছু সংখ্যক দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীর সহযোগীতায় জালিয়াতচক্রটি স্থানীয় কিছু প্রবাসীর স্ত্রী ও টাউটশ্রেনীর মহিলাকে ব্যবহার করে অনেক অসহায় মানুষের ভিটে-বাড়ি, জায়গা ও সহায় সম্বল প্রতারণার মাধ্যমে দখলে নিয়ে নি:স্ব করে চলেছে। তাদের সাথে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কিছু জেলা-উপজেলার নেতার সহযোগীতা ও নেতৃত্ব। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করে আছে। ফলে জালিয়াত চক্রটি দিন দিন হয়ে উঠছে অপ্রতিরোধ্য। তাদের বিরুদ্ধে কেউ যেন কোন কথা বলতে গেলেই শুরু হয় নানা ধরণের হয়রানী, নেমে আসে হুমকীসহ মামলা ও নির্যাতন। এ জায়গার মূল মালিক এস এম হারুন বলেন, জায়গার মূল মালিক ও মামলার বাদী নুরুল আলমের কাছ থেকে অনেক কষ্টার্জিত টাকায় ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল বোয়ালখালী সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে রেজিষ্ট্রিযুক্ত হেবা এওয়াজ দলিল নং ৯৯৮ মূলে আমি মালিকানায় ও দখলে রয়েছি। কিন্তু এর প্রায় ৫ মাস পর সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্রটি কথিত দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মামলার ২ নং আসামী শাহনেওয়াজ হায়দার শাহীন ও তৎ সঙ্গিয় জালিয়াত চক্রটি ভুয়া ছবি, টিপ এমনকি সম্পুর্ন ভূয়া একজনকে দাতা সাজিয়ে এবং স্থানীয় কুহিনুর আকতার নামের এক প্রবাসীর প্রতারক স্ত্রীকে গ্রহীতা বানিয়ে একই সালের ২৪ সেপ্টেম্বর-১৪ ইং বোয়ালখালী সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এ জায়গার ভূয়া দলিল সৃষ্টি করে। এর কিছুদিন পর ঐ ভূয়া দলিলের ভূয়া মালিকানা নিয়ে কথিত জেলা আ. লীগ নেতাসহ জায়গাটি অবৈধ দখলে নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করলে তা এলাকাবাসী প্রত্যাখ্যান করে। এরপর জায়গাটির প্রকৃত মালিক সেই আ.লীগ নেতাসহ ৪জনকে আসামী করে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্পেশাল মামলা নং-৪২/১৫ দায়ের করে। মামলা সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী রায়খালী এলাকার হযরত ছৈয়দ ছগীর মোহাম্মদ তালুকদার পাড়ার আবদুল মোনাফ (বুলু) এর স্ত্রী কোহিনুর আকতার ভুয়া গ্রহিতা ও অজানা একজনকে ভূয়া দাতা সাজিয়ে অন্য জনের ছবি ও টিপ লাগিয়ে জাল দলিল সৃজন করেন। কিন্ত এ জায়গার ভূয়া রেজিষ্ট্রি দলিল সৃজনের প্রায় ৫ মাস আগে প্রকৃত বর্তমান মূল মালিক একই এলাকার এস এম হারুন অর রশিদ এর নামে মূল মালিক থেকে বোয়ালখালী সাব-রেজিষ্টি অফিসে রেজিস্ট্রি মূলে স্বত্ত্ববান হন। এ ব্যাপারে জানতে কহিনুর আকতারে মোবইলে কল দিলে মুরাদ নামে তাঁর ছেলে পরিচয়ে দেন। তিনি এব্যাপারে কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। জালিয়াতির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ২ নং আসামী দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের (মুছলেম উদ্দিন আহমেদ অনুসারী) ত্রান ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শাহনেওয়াজ হায়দার শাহীনকে এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি। বোয়ালখালী সাব-রেজিষ্টারকে এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দেন অদালত। দেওয়ানী কার্যাবিধি ১৯০৮ এর ১৬ নং আদেশ অনুসারে স্মারক নং ৩১(৫) উভয় পক্ষের শুনানী বোয়ালখালী সাব রেজিষ্টার এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে উভয় পক্ষকে লিখিত বক্তব্য প্রদানের নির্দেশ দেন বোয়ালখালী সাব রেজিষ্টার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মাননীয় অদালত তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তদন্তাধিন বিষয়ে কোন ধরণের মন্তব্য করতে রাজি নয়। |