/ বিশেষ / শান্তিরক্ষা মিশনে তিন দশকব্যাপী সেবা ও আত্মত্যাগের অবদান তুলে ধরলেন জাতিসংঘ
জাতিসংঘে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষা বাহিনী
শান্তিরক্ষা মিশনে তিন দশকব্যাপী সেবা ও আত্মত্যাগের অবদান তুলে ধরলেন জাতিসংঘ
আরিফুর সাদনানঃ
|
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীবাহিনী মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্কৃতি থেকে আনা বিভিন্ন ভাষা-ভাষী দ্বারা গঠিত একটি বাহিনী যারা বিশ্বের বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দুর্বল সম্প্রদায়গুলোকে দ্বন্দ-সংঘাত থেকে রক্ষা করে শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়া সংগ্রামরত সেসব দেশগুলোকে সর্বোপরি সমর্থন করে, এই সাধারণ উদ্দেশ্য নিয়েই সেবার হাত বাড়িয়ে বিশ্বশান্তিরক্ষা ও প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
আর জাতিসংঘের এ শান্তিরক্ষা অভিযানে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ কর্তৃক গঠিত সংগঠনটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা সংস্থার সাথে কাজ করে আসছে। গত তিন দশক ধরে, এইসব সাহসী পুরুষ এবং নারীরা যেসব দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন তার অবদান অপরিমেয় বলে স্বীকার করেছেন জাতিসংঘ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সারা বিশ্বের ১০টি মিশনে সর্বমোট ৭,২৪৬ জন বাংলাদেশি সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী একযোগে কাজ করেছেন। এসব বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেন যা ঐ দেশের জনগনের জন্য সকল ধরনের সেবা ও সুরক্ষা প্রদান, পরিকল্পিত নকশার দ্বারা রাস্তাঘাট নির্মান করে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করেছে। এসকল সেবা সেসব দেশের সরকার ও জনগণের জন্য বাংলাদেশি সেনা ও পুলিশ বাহিনীর এক অসামান্য অবদান। নিচে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষাবাহিনী কর্তৃক কাজের ছবি দেয়া হলঃ ছবিঃ মিনুসমা/ মার্কো ডরমিনো বিগত বছরের ন্যায় এই বছর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৩০ বছর পুর্ণ হতে যাচ্ছে। ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশি সৈন্য ও পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং তখন তারা ইরান ও ইরাকের মধ্যকার যুদ্ধক্ষেত্র নিরীক্ষণে সাহায্যের জন্য কাজ করেছে। মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকে ১০টি শান্তিরক্ষা মিশনগুলির মধ্যে অংশগ্রহণ করছে একটি বাংলাদেশী দল, যারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার পতাকা হাতে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মিশন শেষে বিদায় অনুষ্ঠানে তোলা ছবি। ছবিঃ লগন আবাসসি ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত হাইতিতে একটি বাংলাদেশী মহিলা পুলিশ ইউনিট গঠন করা জাতিসংঘের মিশনে পাঠানো হয়, যা ‘মিনুসতাহ’ (MINUSTAH) নামে পরিচিত। ১৬০ জনের এই পুলিশ ইউনিট যারা ২০১০ সালের মারাত্মক ভূমিকম্পের পর হাইতিতে পুনর্বাসন প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেন। ছবিঃ মনুসকো/ আবেল কাভানাঘ জাতিসংঘে অংশগ্রহণকারী শান্তিরক্ষীরা মধ্য আফ্রিকা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি) এবং সুদানের দারফুর অঞ্চলসহ বুনিয়া, ইতুরী প্রদেশ এসমস্ত স্পর্শকাতর দেশসমূহে কাজ করেছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৩২ জন আত্মত্যাগী বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীবাহিনী তাদের চূড়ান্ত সেবা প্রদানের মাধ্যমে জাতিসংঘে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। ছবি: মোনুসকো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো’তে (ডিআরসি) বাংলাদেশি সৈন্যের একটি নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামে নিশ্ছিদ্র প্রহরার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা সেবা প্রদান করে আসছে। রুটিনমাফিক নিয়মিত নিরাপত্তা প্রহরার সময় বাংলাদেশি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার পূর্ব কঙ্গো’র ইতুরি প্রদেশে এডিএ গ্রামের প্রধানের সাথে সাক্ষাত করে থাকে। বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনা-অবদানকারী দেশ। ছবি: মিনুসকা সারা বিশ্বে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশী দলগুলো বিভিন্ন ভূমিকা পালন করে আসছে । চিত্রটি জাতিসংঘে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা মধ্য আফ্রিকার একটি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করাকালীন সময়ে তোলা। জাতিসংঘের মিশনে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো’তে (মনুসকো) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নায়মা হক এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্না-ই-লুতফীকে পাঠানো হয়। ছবি: ইউএনমিস জাতিসংঘের মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়াররা দক্ষিণ সুদানের জুব্বা ও বোরের মধ্যবর্তী গুম্বো ও মঙ্গলার ৭৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে রাস্তাগুলো স্থানীয় জনগণকে বাজারের সাথে সংযুক্ত করে সংস্কার করা হচ্ছে। |