/ সারাদেশ / তালতলীর রাখাইনরা ভূমি দস্যুদের কাছে জিম্মি: বৈরী আচারনে বিলুপ্তর পথে রাখাইনরা
তালতলীর রাখাইনরা ভূমি দস্যুদের কাছে জিম্মি: বৈরী আচারনে বিলুপ্তর পথে রাখাইনরা
তালতলী(বরগুনা) সংবাদদাতা:
|
বরগুনা জেলার রাখাইনরা ভূমি সন্ত্রাসীদের বৈরী আচরণে টিকে থাকতে পারছেনা। বরগুনা এলাকায় বসবাসরত রাখাইনরা আজ দিশেহারা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের হয়রানী শিকার, বৈরী আচারণ, জাল জালিয়াতিসহ নানা রকম চক্রান্তের পরে রাখাইনরা আজ নিজ ভূমি পরবাসী। তারা নানা রকম অবজ্ঞা আর হয়রানী শিকার হচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা এদেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। রাখাইনদের প্রবীন নেতা মিঃ মংতাহান জানান, রাখাইনরা এ অঞ্চলে প্রায় ২০০ শত বছর অধিক ধরে বসবাস করে আসছে। শুরুতে এই অঞ্চল ছিল জঙ্গল আর জীব জন্তুতে ভরপুর। রাখাইনদের পূর্ব পুরুষেরা সেই সব জঙ্গল পরিস্কার করে ভয়ংকর জীব জন্তুর সঙ্গে অসীম সাহসের সাথে তীব্র লড়াই করে অনাবাদি পতিত এলাকায় টিকে কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আবাদযোগ্য ভূমিতে পরিণত করে। তাদের আত্ম-ত্যাগের মহিমায় আজ অত্র এলাকায় ফলে সোনালী ফসল। এর পরই বাঙ্গালিরা নজর দেয় রাখাইনদের দখলি ও মালিকানাধীন জমি জমার উপর। বিশেষ করে মঠবাড়িয়া, বামনা, বেতাগী ও পাথরঘাটা পলাতক দাগি অপরাধিরা রাখাইনদের জমি জমা দখল করে তারা স্থায়ী হয়ে যায়। এছাড়াও রাখাইনদের জমি সংলগ্ন খাস জমি বন্দোবস্ত বা জবর দখল করে লোভি মহল বসতি স্থাপন করেন এবং পরে আস্তে আস্তে রাখাইনদের সম্পত্তি অবৈধ দখল করার চেষ্টা চালায়। রাখাইনদের সম্পত্তি অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে ঐ লোভি মহল আমাদেরকে নানা ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। তালতলী উপজেলার ভূমিহীন সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ চানমিয়া গাজী জানান, ভূমি জালিয়াতির চক্র ১৯৬০-৬১ সনের বন্দোবস্তের অনুমোদন এবং ১৯৭১-৭২ সনের রিভিউ দেখিয়ে বন্দোবস্ত অনুমোদন ও ২০১৩-১৪ সনের ৩.০০ একর ভূমি বন্দোবস্তের কবুলিয়ত সম্পাদন করেন। ২০১১-২০১২ সনের প্রায় ২৫০০ একর জমি জাল জাতিয়াতির মাধ্যমে নামে বে নামে বন্দবস্ত করা হয়।
রাখাইনদের জমি জমা কথিত ১৯৬২-৬৩ সনের জাল দলিল, জাল নিলাম, জাল নামজারী ও বরিশাল ২য় সাব জজ আদালতের (তৎকালীন) ডিক্রী তৈরী করে আসছে। জানা যায় তালতলীতে দির্ঘদিন ধরে,আলমগীর মোল্লা আমজেদ ফরাজী (৬০) হাবিব (৪৫) নুরুল হক (৫০) তৎকালীন চেইন ম্যান রফিকুল ইসলাম ইউসুফ ,হুমায়ুন সার্ভেয়ার , জাকির সার্ভেয়ার । এই সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে রাখাইনদের জমি জমা ও বন্দোবস্তের উপর জাল জালিয়াতি কাগজ তৈরী করে আসছে। রাখাইন সামাজ উন্নয়ন সংস্থার সাধারন সম্পাদক মিঃ মংচিনথান জানান যে, ১৯৬২-৬৩ সনের দলিলে মূল ভলিয়াম বহিখানা বন্যায় আংশিক নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে পটুয়াখালী জেলা রেজিস্ট্রি অফিসে অসৎ কর্মচারী যোগসাযোসে উক্ত জালিয়াত চক্র ১৯৬৩ সনের জাল দলিল সৃষ্টিা করে বহু রাখাইন পরিবারের জমি জমা বেদখল করে দেশান্তর করছে। রাখাইন সম্প্রদায় উক্ত জালিয়াত চক্র থেকে রক্ষা পাবার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টি কামনা করছে। তালতলী উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান জানান, মাহামান্য হাইকোর্ট রিভিসনের ২০১৭/২০১৬ নং রিট মামলার সংক্রান্তে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে,বন্দোবস্ত কেসের আদেশ পত্রে ও সহি মহরের কপি পর্যালোচনাআন্তে তৎকালীন আমতলী সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবেন্দ্রনাথ উড়াও , অফিস সহকারী কাজল ও কলিরানী ঘোষের স্বক্ষর জাল জালিয়াতী কাগজ তৈরি করেছেন জালিয়াতী চক্র । তালতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার ফারজানা রহমান জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । |