/ সারাদেশ / ওসমানীতে নার্স হয়েও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মেডিক্যাল অফিসারের প্রভাব খাটাচ্ছেন রেখা বণিক
ওসমানীতে নার্স হয়েও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মেডিক্যাল অফিসারের প্রভাব খাটাচ্ছেন রেখা বণিক
সিলেট প্রতিনিধি :
|
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স হয়েও হাসপাতালে ভেতর ও বাহিরে থাকা প্রভাবশালীদের আর্শীবাদে মেডিক্যাল অফিসারের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে এক নার্সের বিরুদ্ধে। ’রেখা বণিক নামের ওই সিনিয়র স্টাফ নার্সের বিরুদ্ধে রয়েছে অসদাচারন , দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ। খোদ হাসপাতালের ভেতরেই চলছে ওই নার্সকে নিয়ে নানা রকম মুখ রোচক আলোচনা -সমালোচনা।
হাসপাতালে থাকা একাধিক স্টাফ ও নার্সরা জানান,নানা অনিয়ম, চাঁদাবাজি, ঘুষবাণিজ্য, নির্যাতন-নিপীড়নে সীমা ছাড়িয়ে গেলেও রেখা বণিক নামের ওই সিনিয়র ষ্টাফ নার্স সব সময়েই অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বনে যান বার বার ধোয়া তুলসি পাতা।’ অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে যোগদানের পর অদৃশ্য কারণে ওই নার্স সহযোগীদের নিয়ে গড়ে তোলেন একটি শক্তিধর ‘চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট।’তবে পরবর্তীকালে জানা গেছে রেখা বণিক বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে এ সব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের বদলের সাথে সাথে তার রাজনৈতিক নেতারাও বদলে যান।’ এছাড়াও ওসমানী হাসপাতালের সাবেক এক উর্ধতন কর্মকর্তার সাথেও তার গভীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল এবং এখনো রয়েছে। রেখা বণিক হাসপাতালে ভেতর ও বাহিরের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অঘোষিতভাবে বর্তমানে মেডিকেলের স্টাফ কেবিনের অর্থাৎ ১৮ নং ওয়ার্ড ইনচর্জ বনে গেছেন। একই সাথে ভারপাপ্ত সুপারভাইজার-এর দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। কিন্তু তিনি এ সকল দায়িত্ব এড়িয়ে সব সময় সেবা তত্বাবধায়কের কক্ষে সময় কাটান। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় স্টাফ নার্সদের রাত্রিকালীন (নাইট ডিউটি) না দেয়ার জন্য হাসপাতালের ঊর্ধবতন চিকিৎসকদের পরামর্শ রয়েছে। তা সত্বেও রেখা বণিক সন্তান সম্ভভাবা ওই সকল নার্সদের নাইট ডিউটি থেকে ছাড় দিতে তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। না হলে অসহায় অবস্থায় গর্ভকালেও নার্সদের নাইট ডিউটি করতে হয়।এ সকল তথ্য জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী, ভোক্তভোগী নার্সরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্টাফনার্স হলেও দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে রাত্রিকালীন দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি রেখা বণিককে। নার্সদের মধ্যে যারা তার অনুগত তাদেরকে ভাল ও পছন্দমতো জায়গায় ডিউটি বন্টণ করে দেন তিনি। পদবীতে নার্স বা সেবিকা হলেও বেশভূষায় তিনি একজন মেডিকেল অফিসারের মতই চলাফেরা করেন। সাদা ও অলিখিত কাগজে স্বাক্ষর আদায় ধর্তব্য অপরাধ হলেও রেখারানীর কাছে তা’ অধর্তব্য। প্রায়ই তিনি সাদাকাগজে হাসপাতালে কতব্যরত নার্সদের স্বাক্ষর নিয়ে ইচ্ছেমতো ও ব্যক্তিস্বার্থে তা ব্যবহার করে থাকেন। যারা স্বাক্ষর দানে অপরগতা প্রকাশ করে তাদেরকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নার্স জানান, নতুন পোষাক (ইউনিফর্ম) বানানোর নামে নার্সপ্রতি তাদের কাছ থেকে ১৬শ’ টাকা করে আদায় করেন রেখা। কিন্তু নার্সরা শেষ পর্যন্ত পোষাকই পাননি। এব্যাপারে নার্সরা হয়রানী ও চাকুরী হারানোর ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না বলে সংশি¬ষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। গুণধর নার্স রেখা রাণী বণিকের গ্রামের বাড়ি নেয়াখালী জেলায়। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবিকা পদে কর্মরত রয়েছেন। ২০০৫ সালে বিয়ে করেন শেখর বণিক নামের এক ব্যক্তিকে। কিন্তু ৭০ লাখ টাকা আত্মসাত মামলায় তার স্বামী পলাতক। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-হোতা ও নামধারী কিছু হলুদ সাংবাদিকের সাথে তার রয়েছে গভীর সখ্যতা। আর এ কারনেই পদে সেবিকা হয়েও রেখা রাণী বণিক কার্যত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রভাবশালী মেডিকের অফিসার বনে গেছেন অলিখিত ভাবে। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে রেখা রাণী বণিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটা গ্রুপ অপ প্রচার চালাচ্ছে।’ |