/ রাজনীতি / ডিএনসিসি মেয়র হচ্ছেন জোনায়েদ সাকি?
ডিএনসিসি মেয়র হচ্ছেন জোনায়েদ সাকি?
আব্দুল্লাহ আল মাসুম, ঢাকা:
|
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) উপ নির্বাচনে বাম-গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল দলগুলোর পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিকে। আগামী বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হবে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে কয়েকটি বাম দলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত বাম দলগুলোর একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যদিও বৈঠকে জোনায়েদ সাকি উপস্থিত ছিলেন না। তিনি তখন কর্মী সমাবেশে ব্যস্ত মিরপুর পল্লবীতে। পল্লবীতে বসেই নিশ্চিত হলেন তাকে সমর্থন দিচ্ছে বাম-গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে। মূলতঃ বিএনপি এবং আওয়ামীলীগ ঘরনারা বাইরে সকল দল সম্মিলিত ভাবেই জোনায়েদ সাকিকে সমর্থন দিচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবি কার্যালয়ে বৈঠক শুরু হয়ে রাত ৯ টায় শেষ হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল। তিনি জানান, জোনায়েদ সাকিকে একক প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিপিবি-বাসদ এ সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছে। আগামী দিনে অন্যান্য নির্বাচনেও একক প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘ডিএনসিসি নির্বাচনে আমরা একক প্রার্থী দেব। আমরা প্রেস কনফারেন্স করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবো। বাম শক্তিগুলো একক প্রার্থী দেবে। এই সকল দলের প্রার্থী হিসেবে জোনায়েদ সাকি নির্বাচনে লড়াই করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন সাকি করবেন। বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জোনায়েদ সাকিকে প্রার্থী করেছি।’ যখন জোনায়েদ সাকির সমর্থন নিশ্চিত হচ্ছে বাম ও প্রগতিশীল দল গুলোর বৈঠকে তখন মিরপুরে কর্মী সমাবেশে সাকি কর্মীদের জানাচ্ছেন কেন এবার তার মেয়র হওয়ার সম্ভবনা বেশী। কর্মী সমাবেশে উপস্থিত গণসংহতি আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকদের সূত্রে জানা গেছে, কর্মী সমাবেশে জোনায়েদ সাকি জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্ন বিশ্বাসী ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র নতুন বার্তাকে নিশ্চিত করে, জুনায়েদ সাকি মূলত উদাহরণ দিয়েছেন রংপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফলকে। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে অনুষ্ঠিত এই সিটি নির্বাচনে বিএনপি বা আওয়ামীলীগ থেকে নয় বরং. জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সরকার জোর করে গতবারের ঢাকা সিটি নির্বাচনের মতো কোন নির্বাচন করার ভুল করার সম্ভবনা কম। সেক্ষেত্রে নির্বাচন না করার পদ্ধতি নেওয়ার কথা বহুল ভাবে আলোচিত। কিন্তু, তা করেও সরকার এই মুহূর্তে বিতর্কিত হতে চাইবে না। সেক্ষেত্রে একমাত্র উপায় উত্তর সিটি কর্পোরেশনটি সরকারের হাত ছাড়া করা। এমন হলে, জোনায়েদ সাকির নির্বাচিত হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। কেননা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শিক্ষিত জনগোষ্টি বেশী। তাবিথ আওয়াল বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন। দল হিসেবে বিএনপি বেশ অগোছালো। তাবিথ আওয়ালের ভরসা বিএনপির ভোট ব্যাংক। কিন্তু, বহুল আলোচিত আর্থিক কেলেঙ্কারি প্যারাডাইস পেপারসে ব্যক্তি তাবিথ আওয়ালের নাম কিছুদিন পূর্বেই উঠে এসেছে। এছাড়াও আব্দুল আওয়াল মিন্টুর ছেলে হওয়া ছাড়া তাবিথ আওয়ালের যোগ্যতার প্রশ্ন উঠলে উঠে আসবে শুধু প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারি। এমন একজন প্রার্থীকে বিএনপি সমর্থক ভোটার যারা আছে তারাও ভোট দিবেন না। তাদের ভোট গুলো জোনায়েদ সাকির পক্ষে যাওয়ার সম্ভবনাই বেশী। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের প্রার্থীও একজন ব্যবসায়ী। ক্ষমতাশীন দল হিসেবে নানা কারণে জনগন আওয়ামীলীগের উপর ক্রুদ্ধ। তারপরও আওয়ামীলীগের ভোটও পড়ছে না আওয়ামীলীগের বক্সে। কেননা, ব্যবসায়ী আতিক বেশীর ভাগ আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরই পছন্দ নয়। সেক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের ভোটও যাচ্ছে জোনায়েদ সাকির বক্সে। জোনায়েদ সাকী নির্বাচিত হলে বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের অভিযোগও থাকবে না। ব্যক্তি ইমেজের কারণে সকলের প্রিয়ও তিনি। এক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জোনায়েদ সাকীই হতে পারে ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র হওয়ার সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী। এই বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের বৃহত্তর মিরপুরের নির্বাচন সমন্বয়ক রনজিত মজুমদার রিংকু নতুন বার্তাকে জানান, জোনায়েদ সাকির পক্ষে মিরপুরের গনজোয়ার সৃষ্টির জন্য কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি এবার তিনি নির্বাচিত হবেন। এই বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের পল্লবী জোনের নির্বাচন সমন্বয়ক মাহবুব ইরান বলেন, জনগণকে সাথে নিয়ে একটি দুর্নীতিমুক্ত নগর প্রশাসন গড়ে তোলা এবং নগরবাসীর নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা সকলের সমর্থন প্রত্যাশা করি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ঢাকার নাগরিকদের জীবনযাত্রার পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা আছে তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’ |