/ আইন / আদালত / খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাল রাষ্ট্রপক্ষ
খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাল রাষ্ট্রপক্ষ
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৩২ জন সাক্ষীর জবাবনবন্দি উপস্থাপন করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকার বকশীবাজার এলাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ভবনে বিশেষ জজ (পঞ্চম) ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল এ দাবি জানান। মঙ্গলবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল। আদালত সূত্র জানায়, আজ বেলা ১১টায় আদালতের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ১১টা ৪ মিনিটে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল তার বক্তব্য শুরু করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে যে অর্থ প্রাইম ব্যাংকে আসে, এ অর্থ দুই ভাগে ভাগ হয়। পরে আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও তারেক রহমানের যৌথ অ্যাকাউন্ট থেকে এ অর্থ উত্তোলন করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বগুড়া ও বাগেরহাটে এতিমখানা নির্মাণের জন্য আদালতে যে অর্থের তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী যে টাকা দেশে এসেছে, সে টাকা রাষ্ট্রের। এ টাকা আত্মসাতের দায় আসামিদের নিতে হবে।’ আসামি পক্ষের আইনজীবীদের ইঙ্গিত করে মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, ‘এ টাকা কোথায় ব্যয় হলো বা কোথায় গেলো –এই ব্যখ্যা তারা দিয়ে যাবেন।’ তিনি বলেন, ‘ভুয়া সম্পত্তি কিনে এবং একটি সিভিল মামলা দায়ের করে টাকা আত্মসাতের নাটক সাজিয়েছিলেন আসামিরা। ৩২ জন সাক্ষীর জবাবনবন্দি উপস্থাপন করে আমি আদালতে যে বিবরণ দিয়েছি, এর মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি বলে মনে করি। আর তাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০৯ ও ৪০৯ দণ্ডবিধিতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছি।’ এদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতে দুইটি আবেদন জমা দেন। একটি হলো জামিন স্থায়ী করার, অন্যটি সময়ের। সময়ের আবেদনে আসামি পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘২০ ডিসেম্বর (বুধবার) আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করা হয়েছে। এতে আসামি পক্ষ জেরার জন্য যথেষ্ট সময় পাবে না। কিন্তু এর জন্য সময় প্রয়োজন।’ আদালত জামিন স্থায়ী করার আবেদন স্থায়ী করলেও সময়ের আবেদন না মঞ্জুর করে দেন এবং নির্ধারিত তারিখে জেরা হবে বলে জানান। আদালত সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট-সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ মামলা দুটির অভিযোগ গঠন করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে দুদক খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট-সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ মামলা দুটির অভিযোগ গঠন করেন। |