/ সারাদেশ / পুলিশ কর্তৃক হত্যাকান্ডের স্বীকার হওয়ার অভিযোগে জয়পুরহাটের সাইদুরের লাশ ২ মাস পর উত্তোলন
পুলিশ কর্তৃক হত্যাকান্ডের স্বীকার হওয়ার অভিযোগে জয়পুরহাটের সাইদুরের লাশ ২ মাস পর উত্তোলন
আব্দুন নুর নাহিদ, কালাই(জয়পুরহাট):
|
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার হারুঞ্জা শাহ্ পাড়া গ্রামে দাফনের ২ মাস পর কবর থেকে সাইদুর রহমান (৩২) নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সাইদুর রহমান ওই গ্রামের কাজেম আলীর ছেলে। শনিবার সকাল ১১ টায় শাহ্ পাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে ওই ব্যবসায়ীর লাশ উত্তোলন করা হয়।জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দায়িত্বরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বিএম তারিকুজ্জামানের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে ২য় বারের মতো ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। জানা যায়,গত ৯ অক্টোবর ভোরে পুলিশ কালাই উপজেলার হারুঞ্জা গ্রামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের মামলার পলাতক আসামি শাপলাকে গ্রেফতার করতে তার বাড়িতে যায়। এ সময় শাপলার স্ত্রী মাসুদা ও ভাই ফেরদৌস পুলিশের মারধরের শিকার হন। খবর পেয়ে শাপলার চাচা সাইদুর প্রতিবাদ করলে পুলিশ বাড়ির প্রধান ফটকে তার মাথা ও ঘাড়ে পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে এবং তলপেটে লাথি মারে। গুরুতর আহত সাইদুরকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী হাসপাতাল ঘেরাও করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে কালাই থানা মামলা না নিলে সাইদুরের বাবা কাজেম আলী ১১ অক্টোবর অভিযুক্ত দুই এসআই ও দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ ইকবাল বাহার মামলাটি কালাই থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিলে মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়। নিহত ব্যবসায়ী সাইদুর রহমানের বড় ভাই জাহিদুল আলম বলেন, আমার ভাইয়ের ঘাড়ে ও দুই হাতে পুলিশের মারপিটের চিহ্ন সবাই দেখেছে। অথচ প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দুই হাতে আঘাতের চিহ্নের কথা বলাও হলেও মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি। আর সেই সুযোগে পুলিশ অসত্য প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে শুরু থেকেই পুলিশ তাদের অসহযোগিতা করছে। এমনকি এই হত্যাকান্ডের মামলাও থানায় নেওয়া হয়নি। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. উজ্জল হোসেন জানান, পুলিশের দাখিল করা প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে নিহতের বাবা ও মামলার বাদী কাজেম আলী আদালতে নারাজি আবেদন করেন। আদালতের শুনানির পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে যে কোনও মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক নিয়ে বোর্ড গঠন করে পুনঃ ময়না তদন্তের আদেশ দেয়।একই সঙ্গে আগের ময়নাতদন্তে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের কোন গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন,‘আদালতের আদেশ পেয়েছি। সে অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |