/ সারাদেশ / মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়াই ৮ মাস ডেপুটেশনে শিক্ষকের দাবী’ ডিডির আদেশে ডিডির দাবী’ সাময়িক ব্যবস্থা
মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়াই ৮ মাস ডেপুটেশনে শিক্ষকের দাবী’ ডিডির আদেশে ডিডির দাবী’ সাময়িক ব্যবস্থা
আজমীর হোসেন তালুকদার, ঝালকাঠি:
|
কক্ষ স্বল্পতা, শিক্ষক সংকট এবং বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষক অনুপস্থিতির কারণে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চলছে জোড়াতালি দিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়মিত মনিটরিং ও পরিদর্শনের দায়িত্ব কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ থাকায় হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আপোশরফা করে ক্লাস ফাঁকি, নিয়মিত স্কুলে না আসা, ইচ্ছে মাফিক আসা বা আগেই চলে যাওয়া নিত্যনৈমত্যিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে বলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপকালে জানাগেছে। শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতায় অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়কে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে এর সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে ডেপুটেশন বাণিজ্য। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জয়িতা হালদার। গত ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে বিধিমোতাবেক মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়ে কান্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে যোগদান করেন। এক্ষেত্রে ওই শিক্ষক বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস.এম ফারুকের মৌখিক অনুমতিতে তিনি ডেপুটেশনে রয়েছেন বলে দাবি করেন। বিধি অনুযায়ী তার নির্ধারিত কর্মস্থল উপজেলার চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হলেও গত আট মাস ধরে তিনি গোহালকাঠি বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী কান্ডপাশা গোহালকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও এখানে ৬ জন শিক্ষক রয়েছে। সরেজমিনে চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেলো আরো করুণ অবস্থা। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশী হওয়ায় ক্লাস রুম সংকটে প্রতিটি ক্লাশ রুমে ঠাসাঠাসি করে বসছে শিশু শিক্ষার্থীরা। ক্লাশ রুমের সংকটের উপর আবার শিক্ষক স্বল্পতার কারণে উপযুক্ত শিক্ষা পাচ্ছেনা। যারফলে চর এলাকার অসংখ্য শিশু শিক্ষার্থীরা অকালেই ঝড়ে পড়ছে বিদ্যালয় থেকে। এ বিদ্যালয়ে কাগজ কলমে মোট ৬ জন শিক্ষক থাকলেও ক্ষমতার জোরে শিক্ষিকা জয়িতা হালদার ডেপুটেশনে থাকায় বর্তমানে শিক্ষক আছে ৫ জন। তার এ ডেপুটেশনের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট সৃষ্টি হলেও জেলা বা উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন রহস্য জনক ভাবে নির্বিকার। খোজ নিয়ে জানা গেল, বিধি লংঘন করে সহকারি শিক্ষকা জয়িতা হালদার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতি না নিয়ে বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস.এম ফারুকের সাথে গোপন সম্পর্কের সূত্রে মৌখিক আদেশের দোহাই দিয়ে গত ১৯ এপ্রিল তার সুবিধাজনক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে যান। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। ডেপুটেশনে চলে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট স্কুলে শিক্ষক সংকট সৃষ্টি হলেও সেই স্কুলের নামেই বেতন-ভাতা খাচ্ছেন ডেপুটেশনে যাওয়া এই শিক্ষক। এ ব্যাপারে সহকারি শিক্ষক জয়িতা হালদার বলেন, যাতায়াতে অসুবিধার কারণে ডেপুটেশন নিয়েছি,আগামী জানুয়ারিতে বদলির চেষ্টা করবো। তিনি আরও বলেন, চর আমতলী স্কুল থেকে তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। কান্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাছলিমা বেগম বলেন, ‘ডিডি স্যারের মৌখিক আদেশে জয়িতা হালদার এপ্রিল মাস থেকে এ স্কুলে ডেপুটেশনে রয়েছেন।’ বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস.এম ফারুক বলেন, ইভটিজিং সংক্রান্ত একটি ঝামেলার কারণে জয়িতা হালদারকে চর আমতলী স্কুল থেকে সাময়িক ব্যবস্থা হিসাবে কান্ডপাশা গোহালকাঠি স্কুলে আনা হয়েছিল। এটা ডেপুটেশন নয়। শীঘ্রই তাকে চর আমতলী স্কুলে ফেরত পাঠানো হবে। |