/ সারাদেশ / জলাশয়হীন শহরের দুটি পুকুর রক্ষায় নাগরিক ফোরামের সংবাদ সম্মেলন
জলাশয়হীন শহরের দুটি পুকুর রক্ষায় নাগরিক ফোরামের সংবাদ সম্মেলন
আজমীর হোসেন তালুকদার, ঝালকাঠি:
|
এক সময়ের অফুরন্ত পানির প্রবাহে ভরা ঝালকাঠির ১০ খাল ও বেশ কিছু পুকুর জলাশয়ের বিলীন হওয়ার পর ভূমিলোভী একটি জাল-জালিয়াত চক্র শহরে টিকে থাকা কাপুড়িয়াপট্টি ও ডাকঘর সংলগ্ন পুকুর দুটিও গ্রাস করে নেয়ার গভীর ষড়যন্তে লিপ্ত রয়েছে বলে গুরুত্বর অভিযোগ উঠেছে। একবিংশ শতাব্দিতে নগর সভ্যতার আগ্রাসনে ক্রমবর্ধমান হারে হারিয়ে যাওয়া পুকুর-জলাশয়ের পানি প্রবাহ সচল রাখতে, অগ্নির্দূঘটনা থেকে নগরবাসীর জীবন-সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে ও পরিবেশ বান্ধব শহর গড়ে তুলতে পুকুর দুটি রক্ষায় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন, ঝালকাঠি পৌরসভাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় বিএমএসএফ কার্যালয় ও ১২টায় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলনে ভুমিলোভী চক্রের কবল থেকে এই দুটি পুকুর সহ অবশিষ্ট জলাশয় রক্ষার দাবীতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ঝালকাঠী জেলা সভাপতি মোঃ আজমীর হোসেন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ঝালকাঠির জনগণের প্রয়োজনে ১৭৮৫ সালে পুকুর দুইটি খনন করেন মহারাজ জয় নারায়ন ঘোষাল নামক এক জমিদার। এই পুকুর দুটি শহরের মাঝে হওয়ায় শহরের বিভিন্ন ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগলে পানির যোগান দিত। পাশাপাশি গোসল করাসহ সাংসারিক কাজে ব্যবহার এর জন্য আবশ্যক ছিল। কিন্তু কতিপয় ভুমি খেকো উক্ত পুকুর দুটি পাকা স্থাপনাসহ বিভিন্নভাবে দখল করে নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। আর পৌরবাসী তাদের প্রয়োজনের সময় পানি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছে, গত বছর শহরের কেন্দ্রস্থল তুলাপট্টিতে আগুন লেগে পানির অভাবে কয়েকটি দোকানপাট ভস্মিভুত হয়। তখন ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উক্ত পুকুর যদি উন্মুক্ত থাকত তাহলে তাদের বিশাল ক্ষতি হত না। মহারাজ জয় নারায়ন ঘোষালের প্রতিষ্ঠিত মহারাজগঞ্জ শহরটি ১৮০২ সালে ঝালকাঠি থানার পরিচিতি পেয়ে ১৮৭৫ সালে পৌরসভার গৌরবে গৌরবান্বিত হয়ে ১৯৭১ সালে মহকুমা এবং ১৯৮৪ সালে জেলা শহরে রুপান্তরিত হয়ে বাংলাদেশের মানচিত্রে এক নবযুগের সৃষ্টি করে। ১৯১০ সালে বৃটিশ সরকার এ অঞ্চলে জরিপ শুরু করলে মহারাজ জয় নারায়ন ঘোষালের খনন করা জনগণের ব্যবহৃত কাপুড়িয়াপট্টির পুকুর ও শৌচাগার এবং পোস্ট অফিসের পুকুর পৌরসভার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রেখে কাপুড়িয়া পট্টির পুকুরের পুর্বপাড়ের জমিতে নির্মিত শৌচাগার গুলি সিএস ম্যাপে স্থান পেয়ে ১৯৪৮ সালে আরএস এবং ১৯৫৪ সালের এসএ এবং বর্তমানে বাংলাদেশ জরিপেও শৌচাগার দাগ কেটে স্থান পেয়েছে। ১৯৬৪ সালে সরকারী পোস্ট অফিসের পুর্বপাশে মৃত. আক্কেল আলী মিয়ার পেট্রোল গোডাউনে আগুন লাগলে সরকারী পোস্ট অফিসসহ এলাকার ঘনবসতিপূর্ণ বাড়ি ঘর রক্ষা করা হয় ঐ পোস্টঅফিসের পুকুরের পানির দ্বারা, এটা একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। সংবাদ সম্মেলনে বেদখল হওয়া পুকুর দুটির জমি উদ্ধার করে ঝালকাঠি বাসীদের দুঃখ কষ্ট লাঘবে সহযোগীতা করাসহ উক্ত পুকুর দুটি লীজ না দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন, ঝালকাঠি পৌরসভাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে দাবী জানানো হয়েছে। |