/ স্বাস্থ্য / ঝালকাঠিতে বিনামূল্যের চিকিৎসা নিতে হয় টাকায়, সক্রিয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও অর্থলোভী সিন্ডিকেট!
(পর্ব-১)
ঝালকাঠিতে বিনামূল্যের চিকিৎসা নিতে হয় টাকায়, সক্রিয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও অর্থলোভী সিন্ডিকেট!
‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র কি মা ও শিশু নিধন কেন্দ্র?
আজমীর হোসেন তালুকদার, ঢাকা:
|
ঝালকাঠি:: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মানুযায়ী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র গুলোতে প্রসূতি মা ও শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার নিয়ম থাকলেও ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে টাকা ছাড়া কোন চিকিৎসা পায় না রোগীরা। বরং সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, পরিদর্শিকা, এফডব্লিউভি ও আয়া মিলে সিন্ডিকেট গঠন করে জোর-জবরদস্থি অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ প্রসূতী নারীসহ তাদের স্বজনদের। প্রায় এক দশক ধরে ঝালকাঠিতে কর্মরত ডাঃ জোয়াহের আলী ও পরিদর্শিকা জুলিয়ারা জেসমিনের মাধ্যমে উক্ত সিন্ডিকেটটি আর্থিক বানিজ্যের একাংশ পৌছে যায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের টেবিলে। যে কারনে এখানে সক্রিয় প্রভাবশালী ও অর্থলোভী এ সিন্ডিকেটের সকল দূর্নীতি, অর্থলিপ্সা ও স্বেচ্ছাচারীতাকে তিনি নির্দিধায় জায়েজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র। মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাঃ জোয়াহের আলী, ভিজিটর জেসমিন নাহার, লক্ষি রানি, মনিকা মিস্ত্রি, মনিরা সুলতানা, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা জুলিয়ারা জেসমিন ও আয়া মিলে গঠিত এ সিন্ডিকেট অর্থপিশাচের ভূমিকায় লিপ্ত রয়েছে। স্থানীয় সরকার দলীয় কতিপয় নেতা ও মন্ত্রীর নাম ভাংগিয়ে জোরপূর্ব অর্থ হাতিয়ে নেয়া একাধিক ভূক্তোভুগী প্রসূতী নারীসহ তাদের স্বজনদের সাথে আলাপকালে তারা এ প্রতিষ্ঠানটিকে মা ও শিশু নিধন কেন্দ্র অভিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছ। সরেজমিন গত সপ্তাহের সোম, মঙ্গল ও বুধ টানা তিন দিন বিভিন্ন সময় দেখা যায়, ঝালকাঠি সদর হাসপাতারের বাউন্ডারীর মধ্যেই পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালিত মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারীতা, দায়িত্বে অবহেলা, বিনামূল্যে চিকিৎসার বদলে বোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় ও সরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেট বানিজ্যসহ আর্থিক কেলেংকারীর ভয়াবহ কাহিনী বেড়িয়ে এসেছে। বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার নীতিমালা কে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের উক্ত সিন্ডিকেটের ধার্যকৃত সর্বনি¤œ চার্জ এমআর ১ হাজার টাকা, ডিএনসি ২ হাজার টাকা, প্রশ্রাব পরীক্ষা ৫০ টাকা, নরমাল ডেলিভারী ২ হাজার টাকা ও সিজারিয়ান অপারেশনে ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রোগী ফেরত দেয়ার ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা। পরপর তিন দিন দুপুর একটা থেকে দেড়টা সময় কালে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে সরেজমিন ঘুরে কোন চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। আছে শুধু ঝালকাঠি ভিজিটর জেসমিন নাহার, লক্ষি রানি সিকদার ও মনিকা মিস্ত্রি। তাদের সাথে কথা বলে রোগী ও স্বজনদের দেয়া তথ্যের সত্যতা স্বীকার করলেও টাকা আদায়ের ব্যাপারে পুরোপুরি অস্বীকার যান তারা। তারা জানান, আমরা কোন রোগীর কাছ থেকে জোর করে টাকা নেই না। সন্তান হবার পরে অথবা আমাদের কাজে কুশি হয়ে যদি কেউ মিস্টি খেতে দেয় তাহলে নেই। জুলিয়ারা জেসমিনকে খুজে না পেয়ে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে কোন সদুত্তর না দিয়ে জানান, কোথায় গেছে তা জানি না। চিকিৎসক জোয়াহের আলী’র সেলফোনে সাংবাদিকদের জানান, আমি একটু জরুরী কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। ২ টার আগে বাইরের কাজটা কি বেশি জরুরী জানতে চাইলে তিনি লাইনটি কেটে দেন। |