/ অর্থনীতি / বাণিজ্য / ব্যাংকিংখাতে পরিবারতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যই একই পরিবার থেকে চারজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে?
ব্যাংকিংখাতে পরিবারতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যই একই পরিবার থেকে চারজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে?
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
বাংলাদেশে ব্যাংকিংখাতে পরিবারতন্ত্রকে গুরুত্ব দিয়ে আইনের সংশোধন হতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি বিল সংসদীয় কমিটি চূড়ান্ত করে দিয়েছে। প্রস্তাবিত এ আইনে বলা হচ্ছে, যে কোন বেসরকারি ব্যাংকে একই পরিবার থেকে চারজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনে এ ধরনের পরিবর্তন তাদের ভাষায় ব্যাংকিং খাতে লুটপাট এবং চরম অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি করতে পারে। ব্যাংকিং আইন সম্পর্কিত বিলটি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি যাচাই-বাছাই করেছে। এখন সংসদে উত্থাপনের হলে চলতি অধিবেশনেই এটি পাশ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সংসদীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একই পরিবার থেকে চারজন পরিচালক হলে সেখানে কোন সমস্যা দেখছেন না তারা। তিনি মনে করেন, আইনকে পাশ কাটিয়ে যে কাজটি আগে নানা অস্বচ্ছ উপায়ে হতো, সেটি যদি আইনের মাধ্যমে করা হয় তাহলে স্বচ্ছ্বতা আসবে। "এমনি নানা ফাঁক-ফোকর দিয়ে পরিবারের অন্য লোকদেরকে নিয়ে ওরা ব্যাংক ঠিকই নিয়ন্ত্রণ করে। বরং এটাতে স্বচ্ছ্বতা আসবে। আগে অস্বচ্ছ্বভাবে অনেক কিছু হতো," বলছিলেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক। বাংলাদেশের একটি বেসরকারি খাতে গত বেশ কিছুদিন ধরেই আইনের তোয়াক্কা না করেই একই পরিবার থেকে পাঁচজন পরিচালক রয়েছেন। সে ব্যাংকটিতে একই পরিবারের পাঁচজন সদস্য রয়েছে। সে ব্যাংক বেসকারি খাতের সবচেয়ে বিশৃঙ্খল ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। সে উদাহরণ টেনে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, সেখানে গত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিবর্তন হয়েছে এবং গত নয় মাস যাবত সেখানে কোন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নেই। নতুন আইন পাশ হলে সেটি ব্যাংকিং খাতকে কোন দিকে নিয়ে যাবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইব্রাহিম খালেদ। তিনি বলেন, "স্বাধীনতার আগে ২২ পরিবার নামে পরিচিত ছিল কতিপয় ধনী যাদের কাছে দেশের শতকরা ৮০ ভাগ সম্পদ কুক্ষিগত ছিল এবং তারা প্রত্যেকে ব্যাংকের মালিক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালিরা সে ২২ পরিবারের বিরোধিতা করেছিল। এখন কি আবার ২২ পরিবারতন্ত্রে ফিরে গেলে ভালো হবে?" বাংলাদেশে বেসরকারী ব্যাংকগুলোর যারা উদ্যোক্তা তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত। গত নয় বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলটির নেতা কিংবা তাদের রাজনৈতিক মিত্ররা বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছেন। যে সংসদীয় কমিটি এখন ব্যাংকিং আইন সংশোধনের বিষয়টিকে সমর্থন করছে তারা এর আগের বৈঠকে একই পরিবার থেকে চারজন পরিচালক থাকার বিরোধিতা করেছিল। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যাংকের মালিকদের চাহিদাই পূরণ করা হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইব্রাহিম খালেদ। |